বিডিও কে বদলির দাবিতে এককাট্টা হল কালিয়াচক ৩ পঞ্চায়েত সমিতির শাসক ও বিরোধী দলের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে উন্নয়ন স্তব্ধ করে দিয়েছেন কালিয়াচক ৩ ব্লকের বিডিও শচীন ভকত। তাই বুধবার কংগ্রেস পরিচালিত এই পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল, সিপিএম ও বিজেপি-র সদস্যরাও একজোট হয়ে বিডিও কে বদলির জন্য সুপারিশপত্র পাঠালেন মালদহের জেলাশাসকের কাছে। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের অভিযোগ, নানান প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা দিচ্ছেন না বিডিও। আর তা নিয়ে বলতে গেলেই সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন।
সুপারিশ পত্র পেয়েই বুধবার বিকেলে জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে গিয়ে বিডিও ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, “কালিয়াচক তিন নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা বিডিওকে পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত কাজকর্ম থেকে সরিয়ে ব্লক থেকে বদলি করার যে সুপারিশ করেছেন তা নজরে এসেছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। তার পর রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।” যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই বিডিও অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
কালিয়াচক তিন নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির মোট সদস্য ৪২ জন। এঁদের মধ্যে কংগ্রেসের ২০, সিপিএমের-১২, তৃণমূল কংগ্রেসের ৯, এবং বিজেপির এক জন সদস্য রয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসের সভাপতি সারিয়াতুল ইসলাম বলেন, “দু’বছর ধরে ইন্দিরা আবাস যোজনা, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা পড়ে রয়েছে। উন্নয়ন স্তব্ধ। তাই বিডিওকে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য অজয় কুমার মন্ডল ও আতাউর রহমানের অভিযোগ, “ত্রাণ তহবিলে টাকা পড়ে রয়েছে অথচ বিডিও গরিব মানুষদের সেই টাকা বিলি করছেন না।” ওই পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সদস্য বিজয় মন্ডল ও বিজেপি সদস্য নীলিমা মন্ডলও ওই বিডিওর জন্য সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
তবে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা এভাবে বিডিও কে বদলির সুপারিশ করতে পারেন কী? এবিষয়ে পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিডিও কে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করতে পারেন। সরকারও তা বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু এ পর্যন্ত এরকম সুপারিশ আসার পরে দু পক্ষকে মুখোমুখি বসিয়ে সমাধানসূত্র বার করার চেষ্টা হয়েছে। দুয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়ার কিছুদিন পর বদলি করা হলেও তা রুটিন বদলি হিসেবেই দেখানো হয়েছে। ডব্লিউবিসিএস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সুব্রত সরকারও বলেন,“পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী সংখ্যগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধিরা কোনও বিডিওকে ব্লক থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারেন। তবে এটা কখনওই বাঞ্ছনীয় নয়।”
এদিকে বিডিওর বিরুদ্ধে আনা বদলির সুপারিশ সমর্থন করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও। তিনি বলেন, “সমস্ত দলের জনপ্রতিনিধির দাবি মেনে কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের বিডিওকে এখনই বদলি করা উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy