Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
অসমে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদ

একলাখিতে ছ’ঘণ্টা অবরোধে দুর্ভোগ

অসমে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মালদহের একলাখিতে ছ’ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল একটি আদিবাসী সংগঠন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গাজলের একলাখি স্টেশনে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিকেল পর্যন্ত অবরোধ চলে। তার জেরে বেশ কিছু ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আরপির আইসি কৃষ্ণগোপাল দত্ত বলেন, “বেশ কয়েকটা ট্রেন দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে ছিল। বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করি। পরে তাঁরা অবরোধ তুলে নিতে রাজি হন।”

একলাখিতে রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

একলাখিতে রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

অভিজিত্‌ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪২
Share: Save:

অসমে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মালদহের একলাখিতে ছ’ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল একটি আদিবাসী সংগঠন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গাজলের একলাখি স্টেশনে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিকেল পর্যন্ত অবরোধ চলে। তার জেরে বেশ কিছু ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। জিআরপির আইসি কৃষ্ণগোপাল দত্ত বলেন, “বেশ কয়েকটা ট্রেন দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে ছিল। বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করি। পরে তাঁরা অবরোধ তুলে নিতে রাজি হন।”

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজলের একলাখি স্টেশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা কাটিহার-মালদহ প্যাসেঞ্জাা, মালদহ টাউন স্টেশনে মালদহ-সাহেবগঞ্জ প্যাসেঞ্জার দাঁড়িয়ে থাকে। হলদিবাড়ি-কলকাতা সুপার ফাস্ট এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও তিন ঘন্টা ধরে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে। দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।

দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকে ক্ষোভ উগরে দেন যাত্রীরাও। একলাখি স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল বাউল গানের একটি দল। এ দিন বিকেল ৪টার সময় শিলিগুড়ির একটি গানের আসরে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। দলের সদস্য কানাই চন্দ্র বাউল, বিমল দাসরা বলেন, “এ দিন আমাদের সব সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছনোর কথা ছিল। রেল অবরোধের জন্য আমরা পৌঁছতে পারলাম না। রেল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপই করেনি।”

হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক দশরথ মণ্ডল বলেন, “চিকিত্‌সার জন্য মালদহ শহরে যাওয়ার কথা ছিল। অবরোধের জেরে যেতে পারলাম না।”

সংগঠনের অভিযোগ, অসমে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের নির্বিচারে খুন করা হলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশের হাতেই তির, ধনুক ছিল। রেল পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের তরফে কয়েক দফায় বিক্ষোভকারীদের আলোচনার পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

অসমে আদিবাসীদের উপর গুলি চালানোয় অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া ও নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা। আহতদের মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে, ঘর-এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রিতদের ফেরানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবিও জানায় তারা। অসমের প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে শোনা যায় তাদের। গত মঙ্গলবারও সংগঠনের তরফে গাজলের পাণ্ডুয়ায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সে দিন অবশ্য ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অবরোধ তুলে নিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা।

এ দিন একলাখি স্টেশনে গিয়ে জিআরপির আইসি কৃষ্ণগোপালবাবু, গাজল থানার ওসি সুমন্ত বিশ্বাস বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। প্রশাসনের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে অবরোধ চলতে থাকায়, ঘটনাস্থলে পৌঁছন গাজলের বিডিও শৌভিক মুখোপাধ্যায়ও। তাতেও ফল না হওয়ায় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি তথা সংখ্যালঘু দফতরের জেলা আধিকারিক কৃষ্ণাভ ঘোষও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালান। এরপরেই বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ অবরোধ ওঠে।

যাত্রী দুর্ভোগের জন্য অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আদিবাসী সিঙ্গল অভিযানের ব্লক সভাপতি বিশ্বনাথ টুডু বলেন, “আমরা যাত্রীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। অসমে আমাদের সম্প্রদায়ের উপর যে অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিবাদে আমাদের এই আন্দোলন। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE