মাত্র কয়েক ঘন্টায় বিক্রি হয়েছে ১২ কুইন্ট্যাল আম। তবু যেন মনে তৃপ্তি নেই আম বাঙালির৷ সবার মুখেই একটা কথা—আর ক’টা আম যদি পাওয়া যেত৷
আম নিয়ে আম বাঙালির যে বিপুল চাহিদা রয়েছে তা নতুন করে বলার নয়৷ বুধবার তা দেখা গেল জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে উদ্যান পালন বিভাগের ফার্মে৷
এ দিনই মোহিত নগরের ফার্মে সরকারি দরে কুড়ি টাকা প্রতি কেজিতে আম বিক্রি শুরু করেছিল উদ্যান পালন দফতর৷ কবে পর্যন্ত এই আম বিক্রি চলবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও তারিখ ঠিক না থাকলেও, দফতরের কর্তারা ভেবেছিলেন দিন কয়েক ধরে তো এই আমের বিক্রি চলবেই৷
কিন্তু বুধবার প্রথম দিনেই যে ভাবে সেখানে আমের বিক্রি হল, তাতে করে বৃহস্পতিবারই হয়তো সমস্ত আম শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে৷ জলপাইগুড়ি উদ্যান পালন দফতরের এক কর্তার কথায়, এ বছর ফার্মে উৎপাদন হওয়া আমের প্রায় আশি শতাংশই তো এ দিন বিক্রি হয়ে গিয়েছে৷
গত চার-পাঁচ বছর ধরে জলপাইগুড়ির মোহিত নগর ফার্মে আম্রপালি ও মল্লিকা আমের চাষ করে সরকারি দরে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে আসছে উদ্যান পালন দফতর৷ ওই দফতর সূত্রের খবর, গত বছর ওই ফার্ম থেকে প্রায় সাত টন আম বিক্রি করা হয়েছিল৷ যদিও এ বার অবশ্য উৎপাদনটা অনেকটাই কম—দেড় টনের একটু বেশি৷
তাই এই স্বল্প উৎপাদনেও সরকারি দরে যাতে অনেক বেশি মানুষ আম খাওয়ার সুযোগ পান সে জন্য একজন গ্রাহকের সর্বোচ্চ তিন কেজি আম কেনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা৷ যা কিনতে এ দিন সকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি কর্মী এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও৷ এত কম দাম হওয়া সত্ত্বেও তিন কেজির বেশি আম না পেয়ে হতাশ হন তাদের অনেকেই৷
এ দিন আম কেনার লাইনে দেখা মিলেছিল ধূপগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সত্যরঞ্জন ঘোষকে৷ তাঁর কথায়, ভেবেছিলেন একটু বেশি করেই আম কিনে নিয়ে যাবেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এ বছর উৎপাদন কম হয়েছে৷ তাই এ বছর একজনকে এর বেশি আম দেওয়া যাবে না৷ ঠিক আছে, একটু কম করে নিলে যদি বেশি মানুষ এই আমের তৃপ্তি পান তাতে মন্দ কি?’’
উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার চারশোরও বেশি ক্রেতা মোহিত নগরের ফার্ম থেকে আম কেনেন৷ এই সমস্ত ক্রেতাদের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যেমন ছিলেন। তার সঙ্গে শিলিগুড়ি শহরের অনেক বাসিন্দাও ছিলেন৷
দিনের শেষে দফতরের কর্মীদের মধ্যে ঘুরছে একটাই জল্পনা—কী করে কয়েক ঘণ্টায় ১২ কুইন্টাল আম বিক্রি হল? দফতরের আধিকারিক শুভাশিস গিরি বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই এখান থেকে আম বিক্রি হচ্ছে৷ কিন্তু কয়েক ঘণ্টায় ১২ ক্যুইন্টাল আম এর আগে কখনও মোহিতনগর ফার্মে বিক্রি হয়নি৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy