Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ক্লাসের ছাত্রদের তাণ্ডবে ভাঙচুর নুরপুর হাইস্কুলে

সিঁড়ির দরজায় তালা দেওয়া নিয়ে মালদহের মানিকচকে বৃহস্পতিবার একটি স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধে। শুক্রবার সেখান থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে মালদহেরই নুরপুর হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের দু’টি গোষ্ঠীর তাণ্ডবে ভাঙল স্কুলের টেবিল চেয়ার।

নুরপুর হাইস্কুলের আহত ছাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

নুরপুর হাইস্কুলের আহত ছাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:০৬
Share: Save:

সিঁড়ির দরজায় তালা দেওয়া নিয়ে মালদহের মানিকচকে বৃহস্পতিবার একটি স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধে। শুক্রবার সেখান থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে মালদহেরই নুরপুর হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের দু’টি গোষ্ঠীর তাণ্ডবে ভাঙল স্কুলের টেবিল চেয়ার। আহত চার ছাত্র। পণ্ড হল শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। পড়ুয়াদের গোলমাল ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যেও। তাঁরাও দু’টি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে একে অপরের দিকে ইট ছোড়েন বলে অভিযোগ।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ সেপ্টেম্বর ছুটি থাকায় এ দিনই শিক্ষক দিবস পালন করা হচ্ছিল। স্কুলের বিভিন্ন বিভাগের ছেলেরা পৃথক পৃথক ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। একাদশ শ্রেণির এ বিভাগের ছাত্রেরা বেলুন ও বিভিন্ন রকমারি কাগজ দিয়ে ঘর সাজাচ্ছিল। সেই সময় ওই ক্লাসেরই অন্য কয়েকজন পড়ুয়া বেলুনগুলি ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরপরেই শুরু হয়ে যায় মারামারি। ক্লাসঘরের চেয়ার, টেবিলে ভাঙচুর করা হয়। চেয়ারের ভাঙা অংশ দিয়েও একে অপরকে মারধর করে ছাত্রদের দু’টি গোষ্ঠী। তখনই ক্লাসের চার ছাত্র আহত হয়। তাদের মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। ছাত্রদের মধ্যে মারামারির কথা বাইরে ছড়াতেই স্কুলে আসেন অভিভাবকদের অনেকে। স্কুলের বাইরেও গণ্ডগোল শুরু হয়। অভিভাবকদের মধ্যে ইট ছোড়াছুড়িতে বেলার দিকে এলাকা রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। পুলিশ এসে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তার পরেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেন।

নুরপুর হাইস্কুলের এক পাশে ধানিয়া পাড়া, অন্য পাশে পাঠান পাড়া। স্থানীয় সূত্রেখবর, এই দুই পাড়ার মধ্যে বছর কুড়ি ধরে বিবাদ। দুই পাড়ার ছেলেরাই নুরপুর হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। স্কুলেও মাঝেমধ্যে দুই পাড়ার ছাত্রদের বিবাদ হয়। সম্প্রতি এই স্কুলের ছেলেরা ভলিবল প্রতিযোগিতায় জেতে। সেই দলের বেশির ভাগ ছাত্রই ধানিয়া পাড়ার। তারা ট্রফি নিয়ে স্কুলে ফেরার পরে বাজি ফাটিয়ে উৎসব করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পাঠানপাড়ার কিছু ছাত্র।

স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি মুকলেসুর রহমান বলেন, ‘‘দুই পাড়ার বিবাদ দীর্ঘদিনের। তার জেরে স্কুলও অনেক ভুগেছে। কিন্তু এ দিন যা হল, এর পরে দুই পাড়ার বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনায় বসতেই হবে।’’ প্রধানশিক্ষক সামসুল হুদার কথায়, এলাকার বাসিন্দাদের বুঝতে হবে, স্কুলে তাণ্ডব চললে তাঁদের সন্তানদেরই ক্ষতি।

বৃহস্পতিবার মানিকচকের যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গোলমাল হয়েছিল, সেখানে এ দিনও এলাকা ছিল থমথমে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। যে ক্লাসঘরে ভাঙচুর হয়, সেগুলি এখনও পরিষ্কার হয়নি। এ দিন স্কুল হয়েছে কিন্তু কলেজ বন্ধ ছিল। স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে গোলমালে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তবে কাউকেই পুলিশ ধরেনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE