সংস্কারের সময় কংক্রিটের বিম মাথায় পড়ে নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় হিলকার্ট রোডের একটি বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাতা সংস্থার গাফিলতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে আবেদন জমা পড়ল থানায়। দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের তরফে শনিবার শিলিগুড়ি থানায় ওই আবেদন জানানো হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, আবেদন নথিভুক্ত করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি, এডিসিপি-র অফিসেও ওই একই আবেদন জমা দিয়েছে ফোরাম।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে হিলকার্ট রোডের একটি বাণিজ্যিক ভবনের সামনের অংশ ভাঙার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ। কোনও সর্তকতা ছাড়াই শুধু একটি বাঁশের কাঠামো তৈরি করে ঊূনের সামনের অংশের স্তম্ভ, কংক্রিটের বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ। তার ফলে একটি কংক্রিটের বিম সজোরে এসে নীচে দাঁড়ানো নিরাপত্তা কর্মী নয়ন রায়ের মাথায় পড়ে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই নয়নবাবুর মৃত্যু হয়। পুর কর্তৃপক্ষের কোনরকম অনুমতি ছাড়াই ভবন সংস্কারের কাজ চলছিল বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর রুমা নাথ। এ বিষয়ে মাস কয়েক আগে মৌখিক অভিযোগ করলেও, কোনও ফল মেলেনি বলে তাঁর দাবি। ঘটনার দিনই ময়নাগুড়ির বাসিন্দা মৃত নয়নবাবুর পরিবারের সদস্যরা শিলিগুড়িতে এসে বাণিজ্যিক ভবন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভও জানান। যদিও, সে দিন দেহ নিয়ে তাঁরা ময়নাগুড়ি ফিরে যান। এ দিন মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে, বিষয়টি নেয়ে তদন্ত চেয়ে সরব হয়েছে ফোরাম।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “সেই আবেদনপত্রটির বক্তব্যের মধ্যে আইনত যদি কোনও অভিযোগ তোলা হয় তবে তার ভিত্তিতেই গাফিলতির মামলা রুজু হতে পারে। তবে বিষয়টি বিস্তারিত খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, অকৃতদার নয়নবাবুর ময়নাগুড়ির বাড়িতে এক ভাই-বোন তাঁর উপর নির্ভরশীল। এ দিন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অমিত সরকার জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেই তিনি পুলিশে আবেদন জানিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে পরিবারের সদস্যরা শিলিগুড়িতে এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও অমিতবাবু দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, “পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সংস্কার কাজের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি। তার জন্যই নয়নবাবুর মৃত্যু হয়েছে। এটা পরিষ্কার গাফিলতি। এই গাফিলতির তদন্ত শুরু করতে পুলিশকে আবেদন জানিয়েছি।”
এ দিনও বাণিজ্যিক সংস্থার কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন। সংস্থার বিভিন্ন নির্মাণের দায়ত্বপ্রাপ্ত রতন বেনিপুরী ফোন তোলেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার এক কর্তা জানান, মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ফোরামের দাবি, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অনুমতি ছাড়া কী ভাবে সংস্কার কাজ চলল তা নিয়েও তদন্ত করতে হবে। এ বিষয়ে শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষকেও অভিযোগ জানানো হবে বলে ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে। শিলিগুড়ির পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভূটিয়া বলেন, “নির্মাতা সংস্থার গাফিলতি থাকলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy