Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চার দশক সংস্কার হয়নি, পথে চারা পুঁতে বিক্ষোভ

প্রায় চার চার দশকেও এক কোদাল মাটি পড়েনি। খানাখন্দে ভরা কাঁচা রাস্তা চাষের জমির চেহারা নিয়েছে। কোথাও গোড়ালি ডুবে যাচ্ছে। আবার কোথাও হাটু সমান জল কাদা ভেঙে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রশাসনিক মহলে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় সদর ব্লকের বাহাদুর পঞ্চায়েতের ঠুঠাপাকড়ি গ্রামের বাসিন্দারা বুধবার সকালে কাদা ভরা রাস্তায় ধানের চারা বুনে প্রতিবাদ জানালেন।

পথ সারাতে প্রতিবাদ। বুধবার ঠুঠাপাকড়ি থেকে বণিকের হাট যাওয়ার রাস্তায় সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

পথ সারাতে প্রতিবাদ। বুধবার ঠুঠাপাকড়ি থেকে বণিকের হাট যাওয়ার রাস্তায় সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৪ ০১:২৪
Share: Save:

প্রায় চার চার দশকেও এক কোদাল মাটি পড়েনি। খানাখন্দে ভরা কাঁচা রাস্তা চাষের জমির চেহারা নিয়েছে। কোথাও গোড়ালি ডুবে যাচ্ছে। আবার কোথাও হাটু সমান জল কাদা ভেঙে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রশাসনিক মহলে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় সদর ব্লকের বাহাদুর পঞ্চায়েতের ঠুঠাপাকড়ি গ্রামের বাসিন্দারা বুধবার সকালে কাদা ভরা রাস্তায় ধানের চারা বুনে প্রতিবাদ জানালেন। দলমত নির্বিশেষে একই বক্তব্য, বামফ্রন্ট আমলের ৩৪ বছর এবং বর্তমান তৃণমূল সরকারের তিন বছররাস্তা সারাতে কেউ উদ্যোগী হননি। ঠুঠাপাকড়ি থেকে বণিকের হাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এতটাই বেহাল যে সেটা রাস্তা নাকি চাষের মাঠ বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এ দিন তাই কয়েকশো বাসিন্দা হইহই করে ধানের চারা বুনতে শুরু করেন। সিপিএম পঞ্চায়েত কর্তারা রাস্তার বেহাল দশার কথা অস্বীকার করেননি। ব্লক প্রশাসনের কর্তারা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি কেন রাস্তা মেরামত হচ্ছে না? জলপাইগুড়ি সদর বিডিও শ্রদ্ধা সুব্বা বলেন, “ওই রাস্তা অ্যাকশন প্ল্যানে আছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে?” পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি রাখি বর্মন জানান, দুবার ওই রাস্তা মেরামতের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু জটিলতায় কাজ হয়নি। সিপিএম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুকুর আলি বলেন, “খুবই খারাপ রাস্তা। চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রাস্তা মেরামত করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু মাটি না মেলায় কাজ হয়নি।”

যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা পঞ্চায়েত কর্তার ওই সাফাই মানছেন না। তাঁদের অভিযোগ, মাটির কোন সমস্যা নেই। রাস্তা মেরামতের জন্য পঞ্চায়েত দফতরে কয়েক দফায় জানানোর পরে মাপজোক হলেও কাজ কিছু হয়নি। হুমায়ুন কবির নামে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী বলেন, “বামফ্রন্টের আমলে ৩৪ বছরে বঞ্চিত ছিলাম। এখনও বঞ্চিত।”

গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাস্তা দিয়ে ঠুঠাপাকড়ি, তেলিপাড়া, বাউদিয়া পাড়া, সরকার পাড়া, চড়াই মারি, প্রধান পাড়া, ধনতলা এলাকার অন্তত দশ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জানান, গ্রামগুলি থেকে ৫৬০ জন ছাত্রছাত্রী দেবনগর এবং অন্য হাইস্কুলে যাতায়াত করে। প্রতিদিন অনেকে পা পিছলে অথবা সাইকেল উল্টে আছাড় খেয়ে কাদা মেখে বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হয়।

চাউলহাটি পর্যন্ত প্রসারিত ওই রাস্তা সন্ন্যাসী ও চড়কডাঙ্গি হাতে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। এলাকার চাষি শেখ আলি বলেন, “প্রতি বছর বর্ষার কয়েকটা মাস হাট বাজার করতে দম ফুরিয়ে যায়। জলপাইগুড়ি সদরে যাওয়ার কথা শুনলে ভয় হয়।” বিকাশ বর্মন, রতন দাসের মতো ছেলেরা জানান, বাড়ি থেকে স্নান করে বেড়িয়ে কাজ সেরে বাড়িতে ফিরে আবার স্নান না করা পর্যন্ত নিস্তার নেই। জামা কাপড় কাদায় ভরে যায়। সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করবেন সেটাও সম্ভব হয় না। জলভরা গর্তের জন্য কিছুটা এগিয়ে কাদায় নামতে হচ্ছে।

অবরোধ। এনজেপি স্টেশন সংলগ্ন অম্বিকানগরে আন্ডারপাস তৈরি সহ ১২ দফা দাবিতে ঘণ্টা দুয়েক অবস্থান করল ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক তৃণমূল। এ দিন ১২টা থেকে এরিয়া অফিসের সামনে অবস্থান হয়। এক মাসের মধ্যে আন্ডারপাস এবং রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে বলে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কৃর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন বলে ব্লক তৃণমূল নেতারা দাবি করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jalpaiguri road repairing agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE