Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জগদ্ধাত্রী পুজোয় শিলিগুড়িতে হোয়াইট হাউস

বাণীমন্দির রেলওয়ে মাঠের স্কুলে যদি হোয়াইট হাউস হয়, তবে পুরাতন মাটিগাড়া রোডকে ১৬০০ পেনসিলভেনিয়া অ্যাভিনিউ বলা যেতেই পারে। অন্তত জগদ্ধাত্রী পুজোর কয়েকদিন। গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জংশনের আলিঙ্গনের জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন হয়েছে। মণ্ডপ তৈরির সময়ে সামনে টাঙানো বড় বড় পলিথিনের চাদর সরিয়ে দিতেই বেরিয়ে পড়েছে হোয়াইটহাউস।

শিলিগুড়ির পাতিকলোনিতে আলিঙ্গনের উদ্যোগে জগদ্ধাত্রী পুজো। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

শিলিগুড়ির পাতিকলোনিতে আলিঙ্গনের উদ্যোগে জগদ্ধাত্রী পুজো। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

বাণীমন্দির রেলওয়ে মাঠের স্কুলে যদি হোয়াইট হাউস হয়, তবে পুরাতন মাটিগাড়া রোডকে ১৬০০ পেনসিলভেনিয়া অ্যাভিনিউ বলা যেতেই পারে। অন্তত জগদ্ধাত্রী পুজোর কয়েকদিন।

গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জংশনের আলিঙ্গনের জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন হয়েছে। মণ্ডপ তৈরির সময়ে সামনে টাঙানো বড় বড় পলিথিনের চাদর সরিয়ে দিতেই বেরিয়ে পড়েছে হোয়াইটহাউস। এ বারে আলিঙ্গনের পুজোর থিম। ৭০ ফুট লম্বা এবং ১৮০ ফুট চওড়া মণ্ডপকে ক্যামেরার এক ফ্রেমে বন্দি করতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেক দর্শনার্থীদের। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেবী মূর্তিও তুলনামুলক অনেকটাই লম্বা। সাদা ধবধবে রঙকে ফুটিয়ে তুলতে মাঠে দুটি বড় ‘টাওয়ার’ তৈরি করে অন্তত শ’খানেক উজ্জ্বল আলো মণ্ডপের দিকে মুখ করে লাগানো হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, যারা আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে হোয়াইটহাউস দেখে এসেছেন, রাতের বেলায় মণ্ডপের দিকে তাকিয়ে প্রথম নজরে তাঁদেরও আসল-নকল নিয়ে ধন্দ তৈরি হতে পারে।

পুজোর মাঠেই চলছে মেলাও। মণ্ডপের পাশেই পাক খাচ্ছে নাগরদোলা থেকে, ডিস্কো রাইড। চাবির রিঙে নাম লেখা থেকে শুরু করে, আচার, গুলি ছুড়ে বেলুন ফাঁটানো, ভিডিও গেম, বাহারি প্রসাধন সামগ্রীর দোকান রয়েছে মাঠের চারপাশে। রয়েছে ফুড কর্ণারও। দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রোল, চাউমিন আর জিলিপি মিষ্টির গন্ধে সরগরম হয়ে উঠেছে মণ্ডপ চত্বর।

বিশাল মণ্ডপের তিন দিক জুড়েই চলছে মেলা। একদিকে তৈরি হয়েছে সাংস্কৃতিক মঞ্চ। সব মিলিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোকে ঘিরে গত মঙ্গলবার থেকে সরগরম শিলিগুড়ি জংশন লাগোয়া এলাকায়। বিকেলের পরেই মণ্ডপে ঢোকার লাইন পড়ছে, রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও, মেলায় ভিড় থাকছে দীর্ঘক্ষণ। ঠিক যেন দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর দৃশ্য।

পুজো কমিটির প্রচার কমিটির সচিব তনুজ দে জানালেন, ২০১০ সালে প্রথমবার জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। তনুজবাবুর কথায়, “একটা সময় ছিল যখন দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর সময়, পুরাতন মাটিগাড়া রোড সুনসান হয়ে থাকত। শিলিগুড়ি শহর এবং আশেপাশের এলাকাগুলি যখন আলোয় ঝলমল করত তখন জংশন স্টেশনের রেল আবাসন লাগোয়া এলাকা অনেকটাই অন্ধকারে ঢাকা থাকত। তাই সকলে ভেবে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হয়।”

পঞ্চমতম বর্ষে জাঁকজমকও বেশি বলে উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, বাজেটও বেড়ে হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ। মণ্ডপ চত্বরে জীবন্ত স্ট্যাচুও থাকছে। কোনদিন চার্লি চ্যাপলিন, কোনদিন রামকৃষ্ণ আবার শিব পাবর্তী। মণ্ডপে ঢোকার তিন দিকের রাস্তায় সার দিয়ে লাগানো হয়েছে আলোর তোরণ। মাঠের চারদিকে তৈরি করা হয়েছে আলোর দেওয়ালও। শুধু সন্ধ্যেতেই নয় এ দিন শুক্রবার অষ্টমীর অঞ্জলি দিতেও লাইন দেখা গিয়েছে মণ্ডপে। পুজো কমিটির সভাপতি অভিজিত্‌ দাস বললেন, “শুধুমাত্র বাঁশ, কাপড় আর থার্মোকল ব্যবহার করে হোয়াইট হাউস তৈরি হয়েছে। শুধু মণ্ডপ নয়, উত্‌সবের সার্বিক আমেজের অভিজ্ঞতা হবে পুজোর মাঠে এলে।”

পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তিথি অনুযায়ী আগমনী রবিবার দশমী হলেও, দর্শনার্থীদের অনুরোধে আরও দু’দিন বাড়িয়ে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিমা মণ্ডপে থাকবে। সেই সঙ্গে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri jagadhatri puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE