চা শ্রমিক সংগঠনগুলির জয়েন্ট ফোরামের ডাকা বাগান বন্ধের ডাক ভেস্তে দিতে রাস্তায় নামবে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল। বাগানের অচলাবস্থা কাটানো, শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইন চালুর দাবিতে আগামী ১ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ জুড়ে চা বাগানে বন্ধের ডাক দিয়েছে ফোরাম। দুই জেলার তৃণমূলের পক্ষ থেকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে জানানো হয়েছে, বন্ধ কর্মসূচির বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। রাস্তায় নেমে বন্ধের বিরোধিতা করা হবে। শাসকদলের ভুমিকার সমালোচনায় সরব হয়েছেন চা শ্রমিক নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, শ্রমিক আন্দোলনে রাজনীতি না থাকলেও ভয় পেয়ে সেটা ভাঙার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “জয়েন্ট ফোরাম শ্রমিকদের ভুল বোঝাচ্ছে। দলের কর্মী সমর্থকরা বন্ধের বিরোধিতা করে রাস্তায় নামবে। কোনও ভাবে আমরা বাগানে বন্ধ হতে দেব না।” যদিও চা শ্রমিক সংগঠনগুলির জয়েন্ট ফোরামের নেতৃত্ব জানান, কোন দল অথবা সংগঠন আন্দোলনের বিরোধিতা করতেই পারেন। শ্রমিকরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে বন্ধ করবে। তাঁদের জোর করা হবে না। চা শ্রমিক সংগঠনের কর্মী সংগঠনের কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক চিত্ত দে জানান, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য বোর্ড গঠন করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি সভা হয়েছে। তার পরে কোনও সাড়া নেই। ওই বোর্ডকে কার্যকরী করা, বাগানের অচলাবস্থা কাটানোর দাবিতে ২৪টি চা শ্রমিক সংগঠন সম্মিলিত ভাবে বন্ধের ডাক দিয়েছে। কেউ বিরোধিতা করতে পারেন। শ্রমিকরা জবাব দেবে। তিনি বলেন, “শুধু রিলিফ দিয়ে শ্রমিকদের প্রাণ বাঁচানো অসম্ভব। বাগান সচল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ন্যূনতম মজুরি ৪০১ টাকা দিতে হবে। এখানে রাজনীতির কিছু নেই। যারা বিরোধিতার কথা বলছেন, তাঁদের অনুরোধ করব বাগানের সমস্যার কথা ভাবতে।”
যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, চা শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। সৌরভবাবু গত দু’দিন চা বাগান এলাকায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সভা নিয়েও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “অধীরবাবু বাগান এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।” তার দাবি, ২০১১ সালের পরে বাগানে অনাহার এবং অপুষ্টিতে কোনও শ্রমিকের মৃত্যু না হলেও রাজনীতি চলছে। রাজ্য সরকার শ্রমিকদের জন্য অন্ত্যদয় যোজনা সহ বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে। যদিও ওই দাবি মানতে নারাজ জয়েন্ট ফোরামের নেতৃত্ব। ফোরামের মুখপাত্র মণি ডার্নাল বলেন, “বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। কেউ সেটা অস্বীকার করতেই পারেন। কিন্তু আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য দাবি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy