Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জোগান আছে, বিপত্তি তাপেই

জোগান আছে, তা সত্ত্বেও লোডশেডিংয়ে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। কেন? বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত গরমের জেরেই সমস্যা হচ্ছে।তাঁদের দাবি, গরমের জেরে বিগড়ে যাচ্ছে ‘ট্রান্সমিশন’ প্রক্রিয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

জোগান আছে, তা সত্ত্বেও লোডশেডিংয়ে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। কেন? বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত গরমের জেরেই সমস্যা হচ্ছে।

তাঁদের দাবি, গরমের জেরে বিগড়ে যাচ্ছে ‘ট্রান্সমিশন’ প্রক্রিয়া। তার জেরেই ঘনঘন লোডশেডিং চলছে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায়। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সাধারণত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের জোগান না থাকলে, লোডশেডিং হয়। তবে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে জোগানের ঘাটতি জনিত সমস্যা নেই। সমস্যা তৈরি করেছে তিন জেলার তাপমাত্রা বেড়ে চলা।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহের তারগুলি পুরোনো হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বহনের ক্ষমতাও কমে গিয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানানো হয়েছে, গরমের দিনে এমনিতেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। সরবরাহকারী লাইন দিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ায় এমনিতেই তারের উষ্ণতা বেড়ে যায়, সেই সঙ্গে বাইরের তাপমাত্রাও বেড়ে গেলে তারের ‘সহ্য ক্ষমতা’ পেরিয়ে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যার জেরে বিদ্যুতের সাব স্টেশন থেকে ট্রান্সফরমার পর্যন্ত কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা। পরিভাষায় একে ‘ম্যাগনেটিক লস’ বলা হয়। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকা অস্বাভাবিক উষ্ণ হয়ে পড়ে। যার প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবারহে।

মঙ্গলবারও অবশ্য শিলিগুড়িতে দু’দফায় লোডশেডিং হয়েছে। লোডশেডিং হয়েছে জলপাইগুড়িতেও। গত সপ্তাহে পরপর দু’দিন শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে একাংশ দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। গত সপ্তাহেই শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি পেরিয়ে যায়। যা গত দশবছরের নিরিখে রেকর্ড বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছিল। একে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পরিবহণের ‘লোড’ অন্যদিকে অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় অন্তত ৮টি সাবস্টেশনের ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা কয়েক দফায় বিগড়ে গিয়েছিল।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত মাস থেকেই ঘনঘন লোডশেডিং শুরু হয় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে। বিশেষত দিনের বেলায় এক একদিন কয়েক দফায় এক থেকে ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির শিলিগুড়ির জোনাল ম্যানেজার সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিভাষা অনুযায়ী লোডশেডিং বলতে যা বোঝায় সে সমস্যা নেই। তবে অতিরিক্ত গরমে বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছু সমস্যা হয়েছে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশনে সমস্যা হয়। তবে এখন কোনও সমস্যা নেই।’’ উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক সংগঠন ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘ঘাটতি নেই, অথচ সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটির জন্য লোডশেডিং চলছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক। দীর্ঘদিন ধরে নতুন এবং বিকল্প ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা তৈরির দাবি জানানো হয়েছিল। তা হলে এই সমস্যা এড়ানো যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE