আর্থিক লেনদেনের কারণে ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে পিনাকী দত্ত সেবক রোডে খুন হয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ। গত রবিবার সন্ধ্যায় সেবক রোডের একটি পেট্রোল পাম্প লাগোয়া এলাকায় বাঁ পায়ের শিরা কেটে খুন করা হয় পিনাকীকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাঁর কাছে কয়েকজন টাকা পান বলে পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছিলেন ওই যুবক। টাকার জন্য এক যুবক মাঝেমধ্যে তাড়াও দিচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যুবক কে বা কিসের জন্য তিনি টাকা নিয়েছিলেন তা কাউকে বলেননি। তদন্তে নেমে পুলিশ কিছু তথ্য পেয়েছে, তাতে তদন্তকারী অফিসারদের সন্দেহ, পিনাকীবাবু সম্প্রতি কয়েক হাজার টাকা সম্ভবত কারও কাছ থেকে ধার করেছিলেন। কিন্তু নিজের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় সেই টাকা তিনি মেটাচ্ছিলেন না বলে মনে হচ্ছে। সেই থেকে কোনও গোলমালে জড়িয়ে পড়েই তিনি খুন হয়েছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সবই খতিয়ে দেখছি।’’ কমিশনার জানান, পিনাকীবাবুকে যে সমস্ত এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত, সেই সব এলাকায় খোঁজখবর করা হচ্ছে। বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলে সম্প্রতি তিনি কোনও সমস্যায় ছিলেন কি না তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পারিবারিক গোলমালের পর পিনাকীবাবু নিজেদের হার্ডওয়ারের ব্যবসা থেকে সরে যান। তাঁর বাবা এবং ভাই বর্তমানে ব্যবসা দেখাশোনা করেন। তার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন সংস্থার চাকরি করেছেন। কখনও বিভিন্ন সরবরাহের ব্যবসা করেছেন। স্ত্রী স্কুলে শিক্ষিকতা ছাড়াও প্রাইভেট টিউশন করে সংসার চালাতেন। কিন্তু একসময় তাঁর জীবন যাপনের পদ্ধতি নিয়েও পরিবারের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে। গত কিছুদিন ধরে তিনি কোনও কাজ তেমন করছিলেন না বলেই তদন্তকারী অফিসারেরা জেনেছেন। এই অবস্থায় তিনি কারও কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলেন কি না তাই এখন পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ জানিয়েছেন, পিনাকীবাবু যে এলাকায় খুন হয়েছেন, সেখানে ওই সন্ধ্যায় ৩-৪ যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর মিলছে। আবার ঘটনাস্থলে দুই যুবকদের একটি ফাঁকা সিড়িতে বসে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। পরে যুবকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি যাতীয় কিছু হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু তা স্পষ্ট নয়। এলাকার একটি দোকানের সিসিটিভিতেও দুই জনকে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে একজন পিনাকীবাবু মনে হচ্ছে পুলিশ জেনেছে। কিন্তু ওই যুবকদের মধ্যে বচসার মধ্যে পিনাকীবাবু ছিলেন কি না তা এখনও পুলিশের কাছে একেবারেই পরিস্কার নয়। রবিবার ছুটির দিন থাকায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। কিন্তু পেট্রোল পাম্প, পানশালাগুলি খোলা ছিল। সেখানকার কারও চোখে কোনও ঘটনা চোখে পড়েছি কি না তা পুলিশ দেখছে। এদিন সকাল থেকে শিলিগুড়ি পুলিশের কয়েকটি দল শহরের বিভিন্ন এলাকায় তদন্ত নামেন। পিনাকীবাবু আদিবাড়ির এলাকা মহানন্দাপাড়া, সেবক রোডের একাংশ, হিলকার্ট রোডের নানা অংশ দলগুলি খোঁজখবর করেন। সেবক মোড়ের যে সমস্ত এলাকায় নিহত চা, ফাস্ট ফুড খেতে অটো, রিকশা ধরতে প্রায়ই দেখা যেত, সেই সমস্ত লোকজনের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy