Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
পরীক্ষার্থীদের হয়রানি এড়াতে উদ্যোগ

টেটের দিনে বাড়তি ১০০ বাস, কন্ট্রোল রুম

প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর সুবিধের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গে ১০০টি বাড়তি বাস চালাবে এনবিএসটিসি। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে ওই বাসের রুট চূড়ান্ত করা হবে। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া এগিয়েছে। এরই পাশাপাশি ৩০ অগস্ট পরীক্ষার দিন সংস্থার সদর দফতর কোচবিহার পরিবহণ ভবনে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:৫৯
Share: Save:

প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর সুবিধের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গে ১০০টি বাড়তি বাস চালাবে এনবিএসটিসি। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে ওই বাসের রুট চূড়ান্ত করা হবে। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া এগিয়েছে। এরই পাশাপাশি ৩০ অগস্ট পরীক্ষার দিন সংস্থার সদর দফতর কোচবিহার পরিবহণ ভবনে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। সব ক’টি ডিভিসনের আধিকারিকদের কাছেও স্থানীয় স্তরে কন্ট্রোল রুম চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১০০টি অতিরিক্ত বাস চালানো হবে।”

সংস্থা সূত্রের খবর, এখন এনবিএসটিসি-র মোট সচল বাসের সংখ্যা ৭২৬টি। তার মধ্যে দৈনিক গড়ে ৬০০টি বাস রাস্তায় নামানো হয়। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা এড়ানোর ভাবনা থেকে ইতিমধ্যে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের দেওয়া পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা খতিয়ে দেখে ১০০টি বাড়তি বাস চালানর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে চালানোর জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে নিগমের আরও ২৬টি বাস। এনবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবলচন্দ্র রায় বলেন, “বহু রুটে নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া সাধারণ বাস দাঁড়ায় না। কিন্তু যত বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে পরিষেবা দেওয়া যায়, তা মাথায় রেখে ওই দিন যাত্রীরা চাইলে বাস দাঁড় করাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংস্থার সদর দফতরে ওই দিন সকাল থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হবে। প্রতিটি ডিভিসন অফিসেও একই ভাবে খবরাখবর রাখতে কন্ট্রোল রুম চালুর চেষ্টা হচ্ছে।” সংস্থার কয়েকজন আধিকারিক জানান, একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার পরীক্ষা কেন্দ্র চত্বরে পরীক্ষার্থীদের সবাইকে পৌঁচ্ছে দেওয়া সম্ভব কতটা হবে তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে। তবে অন্তত সময় মতো যাতে সবাই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন, সে জন্য যতটা সম্ভব কাছাকাছি এলাকা পর্যন্ত বাড়তি বাসগুলি চালানো হবে।

যদিও প্রায় দুই বছর আগের টেট পরীক্ষায় যাতায়াতের সমস্যার অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এরপরেও পরীক্ষার্থীদের একাংশের উদ্বেগ কাটছে না। ইতিমধ্যে বহু এলাকায় ব্যাক্তিগত ভাবে দল গড়ে গাড়ি ভাড়া নেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বেসরকারি বাস, মিনিবাস সংগঠনের কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। পরীক্ষার দিন সমস্ত রুটের বেসরকারি স্বাভাবিক বাস চালানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। কোচবিহারে ইতিমধ্যে পুলিশ, প্রশাসন, শিক্ষা দফতরের কর্তারা নির্বিঘ্নে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে দুই দফায় বৈঠক করেছেন। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি অনেকটা এগিয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের দু’শো মিটার এলাকায় পরীক্ষার সময় ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। শুক্রবার ফের বৈঠক করে সব কিছু পর্যালোচনা করা হবে। এনবিএসটিসিকে বাড়তি বাস চালানোর পাশাপাশি বেসরকারি বাস মালিকদের সমস্ত বাস রাস্তায় নামানোর জন্য বলা হয়েছে।’’

কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রের খবর, এ বার কোচবিহারে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭২,৭১৬ জন। সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দার বলেন, “ ১৯২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে।” নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ থেকে বিধায়ক, জনপ্রতিনিধিদেরও পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সাহায্য করতে বলা হয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে সবার সহযোগিতাই দরকার।”

পাশের জেলা জলপাইগুড়িতে এ বার ৮২ হাজার ৬১২ জন টেট পরীক্ষায় বসবেন। আগামী ৩০ অগস্ট ২০৬টি কেন্দ্রে ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে পরীক্ষার্থীদের সরাসরি কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায় বলেন, “পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম, আরটিএ এবং রেল কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কোথায় পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮২ হাজার ৬১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বর্তমান জলপাইগুড়ি জেলার রয়েছে ৫৩ হাজার ৭১২ জন এবং আলিপুরদুয়ার জেলার ২৮ হাজার ৯০০ জন। জলপাইগুড়ি জেলায় ১২৩টি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় ৮১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ বার ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের পরীক্ষার্থীরা টেট পরীক্ষায় বসবেন।

তিন বছরের পরীক্ষার্থীদের নিয়ম মেনে প্রয়োজনীয় পৃথক নথি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হতে হবে। দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা শুরু হবে বেলা দুটায়। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান জানান, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে খোলা কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ০৩৫৬১-২৩২০৩৫/২৩১৩৯৮ ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও যাতায়াতে যানবাহন সংক্রান্ত বিষয়ে জানার জন্য আরটিও কন্ট্রোল রুম রয়েছে। সেখানে ০৩৫৬১-২২০৪৫৬ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে। প্রতিটি পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে মেডিক্যাল টিম রাখার বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE