Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

থানার অদূরেই জেলা পরিষদ ভবনে ডাকাতি

নৈশপ্রহরী এবং কেয়ারটেকারকে বেঁধে রেখে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে নথিপত্র ও টাকা চুরি করল দুষ্কৃতীরা।

তাণ্ডবের চিহ্ন স্পষ্ট জেলা পরিষদ ভবনে।—নিজস্ব চিত্র।

তাণ্ডবের চিহ্ন স্পষ্ট জেলা পরিষদ ভবনে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

নৈশপ্রহরী এবং কেয়ারটেকারকে বেঁধে রেখে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে নথিপত্র ও টাকা চুরি করল দুষ্কৃতীরা।

সোমবার রাত দু’টো নাগাদ বালুরঘাট থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে তৃণমূল পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ভবনে ৭-৮ জনের ওই দুষ্কৃতী দলটি হানা দেয়।

শহরের ডাকবাংলোপাড়ার ওই ভবনে এ দিন গিয়ে দেখা গিয়েছে, সহকারি সভাধিপতি, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং সচিবের ঘর এবং পূর্ত, মৎস্য, নারী ও শিশু কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষের ঘর-সহ ৭টি কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। অফিসগুলির আলিমারি, ক্যাশিয়ারের ঘরের ভল্ট ভেঙে নথিপত্র তছনছ করা হয়েছে। কেয়ারটেকার রমেশ মাহাতোর বাড়ি থেকেও নগদ ১৫ হাজার টাকা ও সোনা লুঠ করা হয়েছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ পালায় দুষ্কৃতীর দলটি।

তবে থানার এত কাছে ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কিছুই জানতে পারল না কেন? পুলিশ অবশ্য দায় চাপিয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের উপরে। থানার পুলিশ অফিসারদের বক্তব্য, “সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ওই এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। তারা কিছু জানায়নি। তাই আমরা ঘটনার কথা কিছু জানতে পারিনি।”

এ দিন সকালে ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পরিষদে ছুটে যান জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, সভাধিপতি-সহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি বিপ্লব খাঁয়ের অভিযোগ, এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে উপযুক্ত তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এ দিন জেলাপরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, “জেলাপরিষদের মতো দফতরে দল বেঁধে দুষ্কৃতী হানার ঘটনাটি অবাক করার মতো। বিভিন্ন দফতরের আলমারির তালা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ ও চুরি করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করে দুষ্কৃতীদের সনাক্ত করতে বলা হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “চুরি করা জিনিসের তালিকা করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই সব দুষ্কৃতীদের ধরা হবে।”

এ দিন জেলা পরিষদ ভবনের নৈশপ্রহরী আতিবুর রহমান বলেন, “আমি ভবনের গেটে পাহারা দিচ্ছিলাম। রাত দু’টো নাগাদ ৭-৮ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভিতরে ঢুকলে চিৎকার করে কেয়ারটেকারকে সজাগ করতে যাই। দলটি হানা দিয়ে আমাকে মারধর করে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। কেয়ারটেকার রমেশবাবু স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে জেলাপরিষদ ভবনের ভিতরে থাকেন। তাকেও পিস্তল দেখিয়ে বেঁধে ফেলা হয়।” রমেশবাবু বলেন, “দুজন দুষ্কৃতী আমাদের বেঁধে ঘরে ঢুকিয়ে বন্দুক উঁচিয়ে আটকে রাখে। বাকি দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন ঘরের তালা ভেঙে লুঠপাট শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানোর পর দলটি ফিরে এসে আমার ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dacoity zilla parishad bhavan balurghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE