Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
হিলি

দুষ্কৃতী হামলায় ফের আক্রান্ত ২ মহিলা, ক্ষোভ

দুষ্কৃতীদের হাতে এক মধ্য বয়সী মহিলা ও তাঁর শাশুড়ি খুন হওয়ার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের ফের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হলেন ওই এলাকার আর এক বধূ ও তাঁর শাশুড়ি। এ দিনের হামলার ঘটনায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে বলে আক্রান্ত পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারও প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছেন, “বাংলাদেশী দুষ্কৃতীরা ওই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুষ্কৃতী হামলা ক্রমশ বেড়ে চললেও রাতে পুলিশি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২৫
Share: Save:

দুষ্কৃতীদের হাতে এক মধ্য বয়সী মহিলা ও তাঁর শাশুড়ি খুন হওয়ার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের ফের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হলেন ওই এলাকার আর এক বধূ ও তাঁর শাশুড়ি। এ দিনের হামলার ঘটনায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে বলে আক্রান্ত পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারও প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছেন, “বাংলাদেশী দুষ্কৃতীরা ওই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুষ্কৃতী হামলা ক্রমশ বেড়ে চললেও রাতে পুলিশি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

সোমবার ভোর ৪টে নাগাদ হিলি থানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে ঘটনাটি ঘটে বাসুদেবপুর সীমান্তে। আক্রান্ত পরিবারের আত্মীয়রা জানান, এদিন ভোরে শৌচাগারে যেতে ঘর থেকে বার হতেই দুষ্কৃতীরা ওই বধূর উপরে বাঁশ দিয়ে হামলা চালায়। বছর পঁয়ত্রিশের ওই বধূ রাজকুমারী গুপ্তার মাথায় আঘাত করে। তাঁর আর্তনাদ শুনে বৃদ্ধা শাশুড়ি ঘর থেকে বার হন। দুষ্কৃতীরা তাঁকেও লোহার হুক দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। দু’জনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় হিলি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই সময় গৃহকর্তা মুন্না গুপ্তা বাড়ি ছিলেন না। তিনি বলেন, “ব্যবসার কাজে খুব ভোরে বেরিয়েছিলাম। ওই সময় স্ত্রী ও মায়ের উপর দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়।” তিনি দাবি করেন, “প্রতিবেশীরা সীমান্ত টপকে এক আততায়ীকে বাংলাদেশে পালাতে দেখেছেন।” জেলা পুলিশ সুপার শীসরাম ঝাঝারিয়াও বলেন, “সীমান্তে ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেনের জেরে গৃহকর্তাকে না পেয়ে মহিলাদের উপর হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা সীমান্ত টপকে পালিয়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ হচ্ছে।”

শনিবার রাতে হিলি থানারই অদূরে বৈকুন্ঠপুর এলাকায় আততায়ীর হামলায় এক বধূ ও তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ি খুন হন। পুলিশ নিহত বধূর একমাত্র ছেলের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছে। তা ছাড়া, মৃত মহিলার মোবাইলের সূত্র ধরে স্থানীয় এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশের ধারণা, ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্যই পাওয়া যাবে। মহিলার সঙ্গে ওই যুবকের কী সম্পর্ক ছিল তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বছর পাঁচেক আগে ওই মহিলার স্বামী আত্মহত্যা করেন। ওই দিন রাতে ওই মহিলার ঘরের গরাদহীন জানলা দিয়ে দুষ্কৃতীরা ঢোকে বলে পুলিশের অনুমান। তারপরে তাঁকে খুন করা হয়। ওই মহিলা থানার সামনে একটি চা ও মুদির দোকান চালাতেন। ব্যবসার কারণে তাঁর সঙ্গে কারও সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল কি না, তা-ও পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে। তবে প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ওই মহিলার সঙ্গে কারও খারাপ সম্পর্ক ছিল না। তাঁর পুত্র তাঁকে দোকান চালানোয় সাহায্য করত। বাবার পরে মা ও ঠাকুমার মৃত্যুর পরে এখন সে একা হয়ে গেল।

বৈকুণ্ঠপুরে জোড়া খুনের পরেই এদিন বাসুদেবপুর এলাকায় আবার শাশুড়ি-বৌমার উপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হিলি এলাকার বাসিন্দারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, সীমান্ত টপকে ওপার থেকে দুষ্কৃতীর আনাগোনা হলেও হিলি থানার পুলিশকে রাতে টহল দিতে দেখা যায় না। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, তপন, গঙ্গারামপুর, বংশীহারি, কুশমন্ডিতে ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের পরে কুমারগঞ্জে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনাগুলিতে দোষীদের গ্রেফতারের বদলে পুলিশ ঘটনাগুলি ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত। পুলিশি ব্যর্থতার বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

terrorist attack balurghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE