Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ধর্মঘট উপেক্ষা করে পরীক্ষা, ভোগান্তি

বামেদের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট উপেক্ষা করেই পরীক্ষা নেওয়া হল উত্তরবঙ্গের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। চলে পঠনপাঠনও। তবে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি ছিল কম।

পরীক্ষা চলছে মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।

পরীক্ষা চলছে মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৪৭
Share: Save:

বামেদের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট উপেক্ষা করেই পরীক্ষা নেওয়া হল উত্তরবঙ্গের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। চলে পঠনপাঠনও। তবে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি ছিল কম।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা ছিল এ দিন। বুধবার সকাল ১১টা থেকে নির্ধারিত সময়েই শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। রাস্তায় স্বাভাবিক ভাবে যান চলাচল না করায় সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে বেগ পেতে হয় পরীক্ষার্থীদের। এর জন্য ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তারা।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়েও এ দিন ক্লাস হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের নিয়ামক সুশান্ত দাস বলেন, ‘‘অন্যান্য দিনের মতোই এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত ক্লাস হয়েছে। তবে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কম ছিল। বেশ কিছু কলেজে পরীক্ষা থাকায় আমাদের দফতরও খোলা ছিল।’’ কোচবিহার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও ক্লাস হয়েছে।

তুলনায় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ছিল খুবই কম। তাই কিছু বিভাগে কয়েকটি করে ক্লাস হয়েছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার অজয় কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম হলেও শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মিরা প্রত্যেকেই এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু কাজ জমে ছিল। অন্য কাজের চাপ কম থাকায় সেই কাজগুলো সেরে ফেলা হয়।’’

গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন তাঁদের অভিযোগ, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কারণ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পড়ুয়াদের ধর্মঘটের দিন আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সবার পক্ষে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া করে আসা সম্ভব নয়। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, ‘‘পরীক্ষার দিনক্ষণ আগে থেকেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিষয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা ছিল। সুষ্ট ভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সমস্ত পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ১০টি বিষয়ের স্নাতকোত্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা ছিল। দুই অর্ধে দুই বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে প্রথম অর্ধের পরীক্ষা শুরু হয়। দ্বিতীয় অর্ধের পরীক্ষা শুরু হয় দুপুর দেড়টা থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার দিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছিল।

পরীক্ষা দিতে আসতে গিয়ে রীতিমত নাজেহাল হতে হয় ছাত্র ছাত্রীদের। কারণ রাস্তায় হাতে গোনা যানবাহন চলাচল করেছে। বালুরঘাট কলেজের ছাত্রী সুমনা রায়, নির্মলা সরকাররা বলেন, ‘‘আমরা বালুরঘাট কলেজে স্নাতকোত্তর পড়াশুনা করি। পরীক্ষার সিট পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বনধের কথা ভেবে আগাম মালদহে আসতে হয়েছে। মেস থেকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে।’’ একই সঙ্গে হবিবপুরের ছাত্র ইংরেজি বিভাগের বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘‘মালদহ-নালাগোলা রুটে বেসরকারি গাড়ি ছিল না বললেই চলে। সরকারি বাস করে ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে আসতে হয়েছে। বেশ কয়েকজন জায়গায় বাস থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। হয়রানি হয়ে পরীক্ষা দিতে হল আমাদের।’’

ধর্মঘটকে উপেক্ষা করে এদিন সকালে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ও অশিক্ষক কর্মীরা কাজে যোগ দেন। তবে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। শহরের পড়ুয়াদের দেখা মিললেও দূর থেকে পড়ুয়ারা আসতে পারেননি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক দাস। তিনি বলেন, ‘‘স্নাতকস্তরের বিজ্ঞান বিভাগের কিছু ক্লাস হয়েছে। তবে ছাত্র ছাত্রীদের অনুপস্থিতিতে বাকি ক্লাসগুলো ঠিকমতো হয়নি।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE