নকশালবাড়ি কলেজে ২১ টি আসনের মধ্যে ২০ টিতে জিতে সংসদ দখল করল এসএফআই। বৃহস্পতিবার এই কলেজ-সহ শিলিগুড়ির ৪টি কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়। ২০১০ সালে নকশালবাড়ি কলেজ চালু হওয়ার পর এ বারই প্রথম এই কলেজে ভোট হল। সমস্ত আসনে প্রার্থী দিলেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সেখানে একটিও আসন পায়নি। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ১টি আসনে জিতেছে। অন্য দিকে বাগডোগরা কলেজে ৫০ টি আসনের মধ্যে ২২টি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পেয়েছে। ১৬টি আসনে ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই ৮টি এবং এবিভিপি ৪ টি আসনে জেতে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ একক ভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও বিরোধী জোট না হওয়ায় ছাত্র সংসদ তারাই গড়তে চলেছে।
অপর দুটি কলেজের মধ্যে শিলিগুড়ি মহিলা কলেজে ২৪টির মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় টিএমসিপি ১৯টি জেতে। টিএমসিপি’র বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষকে মনোনয়ন জমা করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই কলেজে এসএফআই গত প্রায় ১০ বছর ধরে ছাত্র সংসদে রয়েছে। তৃণমূলের হুমকি এবং বাধায় এ বার তারা ৫ টির বেশি আসনে মনোনয়ন জমাই করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। তার মধ্যে ১টি আসনে এ দিন জেতেন। বাকি ৪টিতে জিতেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এসএফআইয়ের অভিযোগ, তৃণমূলের হুমকির ভয়ে অনেকেই ভোট দিতে যায়নি। সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
শিলিগুড়ি কলেজে ৫১টি আসনের মধ্যে ৩৮টি আসনে এ দিন ভোট হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তার মধ্যে ১৯টিতে ছাত্র পরিষদ প্রার্থী দিয়েছিল বলে দাবি করেছে। বাকি ১৯টি আসনে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই ওই সমস্ত আসনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। যদিও ভোটের পর এ দিন তা নিয়ে তৃণমূলের কোনও পক্ষই মুখ খুলতে চাননি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, “গোষ্ঠী কোন্দলের ব্যাপার নেই। একই আসনে ড্যামি প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। স্ক্রুটিনির সময় কোনটা বাতিল হবে অনেক সময় বোঝা যায় না। তবে প্রত্যাহারের দিন সময় মতো সকলে তুলতে পারেনি। তাই প্রার্থীগুলি থেকে গিয়েছিল। তা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি।” এই কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৪৬টি এবং ছাত্র পরিষদ ৫ টি আসন পেয়েছে। ১৩টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে টিএমসিপি।
নকশালবাড়ি কলেজে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নির্ণয়বাবু। তিনি জানান, কেন এমন হল তা পরবর্তীতে খতিয়ে দেখা হবে। বাগডোগরা কলেজে তারাই ছাত্র সংসদ গড়বেন বলে দাবি করেন। শিলিগুড়ি মহিলা কলেজেও তারাই ছাত্র সংসদ গঠন করছেন জানিয়ে বলেন, “এসএফআই’এর যে সব প্রার্থীরা আমাদের নামে অভিযোগ তুলেছেন তাদের অধিকাংশই জিততে পারেননি। তা থেকেই স্পষ্ট তাদের গ্রহণযোগ্যতা এখন আর নেই।”
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস দাবি করেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অধিকাংশ কলেজেই ভোট করতে দেয়নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তবে যেখানেই ভোট হচ্ছে সেখানে টিএমসিপি বিপাকে পড়ছে। নকশালবাড়ি কলেজে সমস্ত আসনে মনোনয়ন দিয়েও একটি আসনেও তৃণমূল জিততে পারেনি বলে তিনি কটাক্ষ করেন। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কেউ চায়নি বলে তাঁর দাবি। সৌরভ বলেন, “বাগডোগরা কলেজে আমরা কারও সঙ্গে জোট গড়ছি না।” অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের তরফে ত্রিদিব সাহা জানান, তাঁরা যে ক’টি আসনে জিতেছেন সেটাই তাদের পাওনা। কারও সঙ্গে জোট গড়ে ওই কলেজে ছাত্র সংসদ গড়ার কথা তাঁরা ভাবছেন না। এ দিন কাওয়াখালির বাসিন্দা ছাত্র পরিষদের প্রার্থী কৃষ্ণকান্ত মল্লিক বাড়ি থেকে বার হওয়ার সময় কিছু লোক তাঁর ‘লাইব্রেরি কার্ড’ এবং ‘পে স্লিপ’ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy