দেবোত্তর ট্রাস্টের বড়দেবীর পুজোয় বন্ধ হয়েছে কচ্ছপ বলি। নিয়ম রক্ষার জন্য কচ্ছপের জায়গায় শুরু হয়েছে মাগুর মাছ বলি। রাজা নেই, রাজ আমলের বলি প্রথা এখনও অটুট রয়েছে। কোচবিহারের বড়দেবী পুজো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য পাল্টে গিয়েছে। কথিত আছে, একসময় নরবলি দেওয়া হত বড়দেবীর পুজোয়। এখন অষ্টমীর দিন রাতে পুজোয় নররক্ত দেওয়া হয়। পুজোয় তেমনই কচ্ছপের জায়গায় মাগুর মাছ। প্রহরে প্রহরে পাঁঠা, মহিষ, শুয়োর বলি চলতে থাকে। ভক্তরা মনস্কামনা পূর্ণ করতে হাঁস, কবুতর বলি দেন। সোমবার পঞ্চমীর দিনই বড়দেবীকে ঘিরে উৎসাহ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দারা ভিড় করতে শুরু করেছেন মন্দিরের সামনে।
দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য তথা কোচবিহারের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “নিয়ম-নিষ্ঠার সঙ্গে বড়দেবীর পুজো করা হয়। বলিপ্রথা মেনেই মহিষ,শুয়োর হাঁসবলি দেওয়া হয়। কিন্তু আইন মেনে এখন আর কচ্ছপ বলি দেওয়া হয় না। তবে আমরা যে কোনও পশু বলির বিপক্ষে।” তিনি জানান, অনেকেই বলি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এবারে বলিপ্রথা চালু থাকলেও আগামীবার থেকে তা বন্ধ করা যায় কি না তা বাসিন্দাদের মতামত নেওয়া হবে। দেবোত্তরের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী জানান, এখন কচ্ছপ লুপ্তপ্রায় প্রাণী। এ ছাড়া কচ্ছপ মারা আইনত নিষিদ্ধ। সেজন্য কচ্ছপের বদলে মাগুর মাছ বলি দেওয়া হচ্ছে।
কোচবিহারের বাসিন্দাদের বড়দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি অন্যমাত্রায় রয়েছে। তাই পুজোয় ঘুরতে বার হয়ে কেউ বড়দেবীর দর্শন করতে ভোলেন না। বোর্ড সূত্র জানা গিয়েছে, পাঁচশো বছরের প্রাচীন এই পুজো মহারাজা বিশ্বসিংহের স্বপ্নাদেশে শুরু হয়েছিল। এবারে প্রত্যেক প্রহরে প্রহরে পাঁঠা বলি দেওয়া হবে। সে জন্য পাঁঠা যোগাড়ের কাজ শেষ করেছেন ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে অষ্টমীর দুপুরে হবে মহিষ বলি, রাতে শুয়োর বলি হবে। বড়দেবীকে যেদিন বিসর্জন দেওয়া হবে। সেদিনও নদীর ঘাটে শুয়োর বলি হয়। আর মনস্কামনা পূর্ণ করতে অষ্টমীর দিন সারাদিন ধরে ভক্তরা পায়রা, হাঁস, পাঁঠা বলি দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy