Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ক্ষুব্ধ কালিয়াগঞ্জের নির্যাতিতার পরিজনেরা

পলাতক ধীমানকে খুঁজে পায়নি পুলিশ

নির্যাতিতা নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার পাঁচদিন পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ তাকে হুমকি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক কোথায় রয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেই হদিসই পায়নি পুলিশ। তাই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাঘনের মৃতার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা। সেই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়।

ধীমান সরকার।—ফাইল চিত্র।

ধীমান সরকার।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০২:৫৩
Share: Save:

নির্যাতিতা নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার পাঁচদিন পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ তাকে হুমকি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক কোথায় রয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেই হদিসই পায়নি পুলিশ। তাই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাঘনের মৃতার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা। সেই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়।
গত শনিবার ওই নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর তার পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে দাবি করেন, ধীমান সরকার নামে প্রতিবেশি ওই যুবক বালুরঘাটের কোনও এলাকায় তার শ্বশুরবাড়ির কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। তা সত্ত্বেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তের খোঁজে বালুরঘাটে যায়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। এমনকী, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য জেলা পুলিশের তরফে দক্ষিণ দিনাজপুর পুলিশের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি মৃতের পরিবারের।

অভিযুক্তকে ধরতে কেনও বালুরঘাটে পুলিশের কোনও দল পাঠানো হল না, আর কেনই বা অভিযুক্তের হদিস পেতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল না সেই প্রশ্নে, কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্ত কোথায় রয়েছে, তা জানতে পুলিশের নিজস্ব নেটওয়ার্ক কাজ করছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলব না।’’ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অভিযুক্তকে ধরার জন্য পুলিশের কোনও দলকে কোথাও পাঠানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তকে ধরতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করছি। তাকে গ্রেফতার করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।’’

তবে পুলিশের সেই পদক্ষেপ কী, বা পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে কীভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে, সেই বিষয়ে পুলিশ সুপার কিছু জানাতে চাননি। তবে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ওই যুবক বালুরঘাটের কোথায় রয়েছে, সেই বিষয়ে মৃতার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশিরা পুলিশকে কোনও তথ্য দিতে পারেননি। জেলা পুলিশের এক অফিসার জানান, অভিযুক্তের মোবাইল নম্বর পাওয়া গেলে সেই সূত্র ধরে তার অবস্থায় নির্ণয় করা যেত। কোনও সূত্র ও ঠিকানা ছাড়া বালুরঘাট থানা এলাকায় আন্দাজের উপর ভর করে পুলিশের পক্ষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব নয়। সেই কারণে, পুলিশের কোনও দলকে বালুরঘাটে এখনও পর্যন্ত পাঠানো হয়নি বলে ওই অফিসার জানান। অভিযুক্ত যুবক যে বালুরঘাটেই রয়েছে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যাচ্ছে না। তাই পুলিশ অভিযুক্তের অবস্থান সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য হাতে না পেয়ে অভিযান চালাতে পক্ষপাতি নয়।

পেশায় দিনমজুর মৃতার বাবা ও মা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে না।’’ ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ধীমান ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ধর্ষণের মামলাটি মেটানোর শর্তে প্রায় দুমাস আগে অভিযুক্ত ধীমানের বাবা বিশ্বনাথবাবু নির্যাতিতা ও তার দাদার নামে তাদের বাড়িটি লিখে দিয়ে অন্যত্র চলে যান। শর্ত হয়, ওই নাবালিকা আদালতে এমন কোনও সাক্ষ্য দেবে না, যাতে অভিযুক্ত ধীমানের শাস্তি হয়। কিন্তু গত শনিবার ওই নাবালিকা আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে সাক্ষ্য দেয়। এর পরেই অভিযুক্ত ধীমান ও তার সঙ্গীরা ওই নাবালিকাকে আদালত চত্বরে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকা ভয়ে বাড়ি ফিরে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ। মৃতার দাদা ধীমানের বিরুদ্ধে হুমকি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police death balurghat rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE