Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পানিঘাটা বাগানে সাত ঘণ্টা বিক্ষোভ

বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুইটি এবং রেশনের দাবিতে ম্যানেজার ও মালিককে প্রায় সাত ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন দার্জিলিং টি ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ হয়। শুক্রবার কার্শিয়াং মহকুমার পানিঘাটা চা বাগানে ঘটনাটি ঘটেছে।

পানিঘাটা চা বাগানে কর্মীদের ঘেরাও। —নিজস্ব চিত্র।

পানিঘাটা চা বাগানে কর্মীদের ঘেরাও। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুইটি এবং রেশনের দাবিতে ম্যানেজার ও মালিককে প্রায় সাত ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন দার্জিলিং টি ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ হয়। শুক্রবার কার্শিয়াং মহকুমার পানিঘাটা চা বাগানে ঘটনাটি ঘটেছে। সকাল সাতটা থেকে দুপুর দেড়টা অবধি বিক্ষোভ চলে। পর মালিকপক্ষ দ্রুত বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, শ্রমিক সংগঠনের নেতারা শ্রম দফতরে বিষয়টি জানিয়ে বৈঠক ডাকার আবেদন করেন। এতে শ্রমিক বিক্ষোভ স্বাভাবিক হয়। তবে বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়।

এ দিনের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের (পাহাড়) জেলা সভাপতি রাজেন মুখিয়াও। পরে আন্দোলন চলাকালীন সেখান যান গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার শ্রমিক সংগঠনের নেতারাও। দলের পানিঘাটার নেতা হরিহর আচার্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে শ্রম দফতরে বৈঠক ডাকার জন্য চিঠিও দেবেন বলে জানিয়েছেন। ঘেরাও বিক্ষোভের জেরে বাগানে উত্তেজনা ছড়ানোয় পুলিশও মোতায়েন করা হয়। বাগানে দুটি দলেরই শ্রমিক সংগঠন রয়েছে।

তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেনবাবু বলেন, “প্রায় ১০ বছর তিন মাসের পিএফ বকেয়া রয়েছে। নয় সপ্তাহ ধরে শ্রমিকেরা রেশন পাচ্ছেন না। গ্র্যাচুইটি বকেয়া। মাঝেমধ্যে মালিকপক্ষ এসে নানা কথা বলছেন। এই দাবিতে শ্রমিকেরা এদিন বাধ্য হয়ে ঘেরাও বিক্ষোভ করেছেন। আমরা শ্রম দফতরে বৈঠক ডাকার জন্য চিঠি দিচ্ছি। কাজ না হলে বড় মাপের আন্দোলন হবে।” একইভাবে বাগান এলাকার মোর্চা নেতা হরিহরবাবু বলেছেন, “শ্রমিকদের দাবি নায্য। আমরা এখই দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানাচ্ছি। শ্রম দফতরের উদ্যোগী হয়ে সমস্যা মেটানো দরকার।”

বাগান সূত্রের খবর, কার্শিয়াং মহকুমার পানিঘাটা চা বাগান ১৯৫৩ সালে তৈরি হয়। প্রতি বছর বাগানে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ মেট্রিক টন চা উৎপাদন হয়। স্থায়ী ৭৫০ জন শ্রমিক নিয়ে মোট শ্রমিক সংখ্যা ১১০০ উপরে। ২০১১ সালের ডিসেম্বর বাগানের শ্রমিক মালিক গোলমালের জেরে বাগানটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাগানটি খোলে। নতুন মালিকের দায়িত্বভার নেওয়ার পর ফের বাগানটি চলছে।

শ্রমিকদের অভিযোগ, ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল এবং চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে কোনও পিফের টাকা জমা পড়েনি। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বকেয়া হয়েছে। গ্র্যাচুইটি বকেয়া রয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ নেই। স্কুলে যাতায়াতের জন্য শিশুদের গাড়ি মিলছে না। পানীয় জল, আবসনের সমস্যা রয়েছে। মালিকপক্ষ আশ্বাস দিলেও ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে না। বাগানের মালিক শঙ্কর সরাফের সঙ্গে একাধিক মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ব্যস্ত আছেন বলে তাঁর অফিস থেকে জানানো হয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, বিক্ষোভ চলাকালীন তিনি শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো এবং শ্রম দফতরে বৈঠকে যেতেও রাজি বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panighata tea garden agitation siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE