টোটো নিয়ে অবরোধ বালুরঘাটে। —নিজস্ব চিত্র।
টোটো চালক ও রিকশা চালকদের বিরোধে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। টোটো বন্ধের দাবিতে সোমবার রিকশা চালকেরা ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডাকেন। সকালের দিকে শহরের রাস্তায় টোটো নামলে দু’পক্ষের বচসা থেকে মারপিট, রিকশা উল্টে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। ফলে সকাল ৯টার পর আর টোটো চলেনি। এতে পড়ুয়া থেকে অফিস যাত্রী সকলেই দুর্ভোগে পড়েন। অথচ পুরসভা ও প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতি সামাল দিতে কেউ উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহার বক্তব্য, “টোটো এবং রিকশা দ্বন্দ্বের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।” অন্য দিকে, মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্তের দাবি, “রিকশার বিষয়টি পুরসভাকেই দেখতে হবে। টোটোর বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশিকা রয়েছে। পুরসভার সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনায় বসব।”
পুর-নাগরিকদের অভিযোগ, গত শনিবার রিকশা চালকেরা টোটো বন্ধের দাবিতে সোমবার ১২ ঘণ্টা রিকশা বনধের ডাক দিয়েছিল। পুর-প্রশাসন সেই বন্ধ এড়াতে উদ্যোগী হননি। ফলে, শহর জুড়ে কোনও রিকশা না চলায় নাগরিকদের যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হল, তার দায় কার? এই প্রশ্ন তুলে সরব বালুরঘাটবাসী। শহরের বঙ্গি এলাকার বধূ জয়ন্তী সরকার, আনন্দবাগান এলাকার বেবি দাস বলেন, “স্কুলগুলিতে মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্কুলে যেতে ভরসা রিকশা কিংবা টোটো। এর কোনওটাই না চলায় হেঁটে সময় মতো স্কুলে পৌঁছতে সমস্যা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ রিকশা চালকেরা যুবশ্রী মোড়ে একটি টোটো উল্টে দিলে গোলমালের সূত্রপাত। প্রহৃত টোটো চালক চন্দন দাস থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান, এক দল রিকশা চালক তার টোটো রাস্তার পাশে উল্টে ফেলে তাঁকে মারধর করেন। ভবিষ্যতে রাস্তায় নামলে হামলাকারীরা তাঁর প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে টোটো চালকেরা রঘুনাথপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। দুপুর দেড়টা নাগাদ মঙ্গলপুর আর্যসমিতির সামনে রাস্তায় পাল্টা হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানে একটি রিকশাকে উল্টে দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। টোটো ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শঙ্কর মোহান্ত বলেন, রিকশা বনধ ডেকে আমাদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ পেয়ে রাস্তায় টোটো চালানো হয়নি। তাঁর বক্তব্য, “ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে বেকার যুবকেরা টোটো চালিয়ে রোজগারে নেমে পড়ে। এখন পুর-প্রশাসনের আপত্তি মানা সম্ভব নয়।” রিকশা চালকদের পক্ষে ঝন্টু সিংহ, বিনয় সরকারেরা বলেন, “পুরসভা থেকে লাইসেন্স, রিকশা স্ট্যান্ড ও ভাড়ার তালিকা দিয়ে আমাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। টোটোর এ সবের বালাই নেই। বিনা অনুমতিতে শহরের যেখানে-সেখানে যাত্রী তুলছে। ভাড়ায় টান পড়ে আমাদের সংসার অচল হয়ে পড়েছে। পুর-প্রশাসনের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy