Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
মোজামপুর

ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, গুলিবিদ্ধ মহিলা, আক্রান্ত পুলিশ

ফের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মোজামপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক গুলি, বোমার লড়াই শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরে পুলিশ ক্যাম্পকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ার অভিযোগও রয়েছে। অল্পের জন্য ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা বেঁচে গিয়েছেন। ক্যাম্পকে লক্ষ করে বোমা-গুলি ছুড়তে দেখে ওই ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮
Share: Save:

ফের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মোজামপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক গুলি, বোমার লড়াই শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরে পুলিশ ক্যাম্পকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ার অভিযোগও রয়েছে। অল্পের জন্য ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা বেঁচে গিয়েছেন। ক্যাম্পকে লক্ষ করে বোমা-গুলি ছুড়তে দেখে ওই ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে ডুলি বিবি নামে এক মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাঁর বাঁ পায়ে গুলি লেগেছে। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এদিকে দুই গোষ্ঠীর সর্ংঘষ থামতে ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ মোজমপুরে ছুটে গিয়েছে। মোজমপুরে যখন দুই গোষ্ঠীর লড়াই চলছে তখন জেলা পুলিশ সুপারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি সত্যজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “যাঁরা রিন্টু বিশ্বাসের হয়ে ওই এলাকায় গোলমাল করছিল, তার এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। এখন ওখানে আর কোনও গোলমাল হবে না।” এদিকে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ক্ষুব্ধ তৃণমূল জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, “আমি অনেকদিন ধরেই জেলা পুলিশ সুপাকে বলছি যাঁরা মোজমপুরে গোলমাল করছে, গুলি, বোমা ছুড়ছে তাদের গ্রেফতার করুন। কিন্তু পুলিশ সুপার কিছুই করছে না। এই গোলমালের জেরে মোজমপুরের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। আমি মোজমপুরের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী রিপোর্ট দেব।” তিনি বলেন, “আজকের ঘটনার পর আমি জেলা পুলিশ সুপারেক ফোন করছি তিনি আমার ফোন ধরছেন না। খালি মেসেজ পাঠাচ্ছেন।”

গত একমাস ধরে কালিয়াচক থানার মোজমপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসাদুল্লা বিশ্বাস ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে তাঁরই এক সময়ে ঘনিষ্ঠ রিন্টু বিশ্বাস ও তাঁর অনুগামীদের মধ্যে গুলি, বোমার লড়াই চলছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে সেলিম শেখ নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। গুলিবিদ্ধ হয় আরো দু’জন। ওই ঘটনায় মৃত সেলিম শেখের স্ত্রী আরেফা বিবি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতর সদস্য আসাদুল্লা বিশ্বাস সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। পাল্টা গুলিবিদ্ধ ওয়াহেদ শেখের স্ত্রী সাইমা বিবি তৃণমূলের রিন্টু বিশ্বাস, তুহুর আলি বিশ্বাস সহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে কালিয়াচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। দু’টি মামলায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ মাত্র দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করেছিল, পুলিশ একটু ঢিলে দিলেই ফের মোজমপুরে দুই গোষ্ঠীর সর্ংঘষ শুরু হবে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। ১০ সেপ্টেম্বরের পর ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় লাগাতার টহল দিচ্ছিল। এলাকার দুই গোষ্ঠীর লোকেরা গা ঢাকা দিয়েছিল। তাতে এলাকায় গুলি, বোমার লড়াই সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছে, গত দু’দিন ধরে পুলিশি টহলদারি ঢিলে পড়তেই আজ সন্ধ্যা থেকে ফের বোমা গুলির লড়াই শুরু হয়েছে মোজামপুরে।

এদিকে এদিনই দুপুরে মোজামপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা গণস্বাক্ষর করে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় সমাজবিরোধীদের যোগসাজসের অভিযোগ তুলে নালিশ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে, স্থানীয় সমাজবিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজসের জন্য এলাকার সাধারণ মানুষ হেনস্থা হচ্ছে। এলাকার সমাজবিরোধীরা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও স্কুল দখল করে রেখেছে। কেউ সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তাদের বাড়ি লুঠ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc group conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE