ব্যবসায়ীকে ছুরি মেরে লুঠের পরে ক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করে পুলিশের গাড়ি। সামসিতে বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।
রেল স্টেশনের সামনে এক কাপড়ের ব্যবসায়ীকে ছুরি মেরে শূন্যে গুলি চালিয়ে ও বোমাবাজি করে টাকা লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের রোষের মুখে পড়তে হল পুলিশকে। শুধু তাই নয়। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ভাঙচুর চালানো হল পুলিশের তিনটি জিপেও। লাঠিচার্জ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা। মালদহের রতুয়া থানার সামসি রেলস্টেশনের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনাটি ঘটে। রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের হদিশ পায়নি পুলিশ। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত ব্যবসায়ীর নাম কমল হাজরা। তাঁর বাড়ি নবদ্বীপে। চাঁচল, সামসি এলাকায় বিভিন্ন দোকানে তিনি কাপড় সরবরাহ করেন। এদিন টাকা পাওনা টাকা তুলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ধরবেন বলে তিনি হেঁটে স্টেশনে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে নদিয়ার জুতোর ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন ছিলেন। ওই সময় আচমকা কমলবাবুকে ঘিরে ধরে জনা দশেকের একদল দুষ্কৃতী। তাঁর টাকার ব্যাগ কেড়ে নেওয়ার সময় বাধা দেওয়ায় হাতে ও পিঠে ছুরি মারা হয়। আতঙ্ক ছড়াতে শূন্যে গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। স্টেশনের সামনেই বোমা ফাটানো হয়। সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের ভয়ে ভয়ে এলাকায় প্রচুর মানুষ থাকলেও কেউ এগিয়ে আসার সাহস পাননি। দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা লুঠ করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়েই স্টেশন এলাকায় পুলিশ পৌঁছতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এদিকে স্টেশন চত্তরে ওই ঘটনার জেরে গোটা সামসি এলাকায় রটে যায় যে জঙ্গীদের একটি দল সামসিতে ঢুকে পড়েছে। যথেচ্ছ বোমাগুলি ছুঁড়ছে। নিমেষে এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। পরে বিষয়টি জেনে বাসিন্দারা এগিয়ে এসে পথ অবরোধে বসে পড়েন। রতুয়ার ওসি রাজু খোন্দকার জানান, ওই ব্যবসায়ী হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি। আহত অবস্থাতেই তিনি ট্রেন ধরে বাড়ি রওনা হয়ে গিয়েছেন। আহত ব্যবসায়ী কমলবাবু বলেন, “স্টেশন চত্ত্বর ভিড়ে থিকথিক করছিল। সেখানে যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে ভাবতেই পারছি না। বাড়ি গিয়ে চিকিত্সা করাব।”
সামসি ব্যবসায়ীর সম্পাদক অজয় শর্মা বলেন, “এলাকায় পুলিশও ছিল। তারপরেও সন্ধ্যারাতে যা ঘটল, তাতে আমরা আতঙ্কিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy