অ্যাম্বুল্যান্সে চড়ে খেলার ‘অপরাধে’ আবাসিক ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে হিলির একটি বেসরকারি হোমে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মার খাওয়ার পরে, শুক্রবার ভোরে ৫ আবাসিক পালিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। পালিয়ে যাওয়া ছাত্রীরা পাশের একটি গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। শুক্রবার বিকেলে আবাসিকদের একাংশের অভিভাবকরা হোমে বিক্ষোভও দেখিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার তিওড় এলাকায় সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত একটি বেসরকারি হোমের ঘটনা।
আবাসিক ছাত্রীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে হোমের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সটি হোম চত্বরেই দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময় ছাত্রীরা নিছকই খেলার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে চড়ে বসে।
ঘটনাটি দেখে হোমের নৈশ প্রহরী ৩৫ জন ছাত্রীকে বারান্দায় দাঁড় করিয়ে বেত দিয়ে মারে বলে অভিযোগ। মেয়েদের হাতে, পিঠে মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা অন্য কাউকে জানালে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন ভোরে আতঙ্কিত ৫ জন পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী হোম থেকে পালিয়ে পাশের গ্রামে এক পরিচিত বান্ধবীর বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে অভিযোগ।
সমাজকল্যাণ দফতরের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত হিলির তিওড় এলাকায় বেসরকারি ওই হোমে দুস্থ ও অনাথ পরিবারের ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের ছাত্রীরা থাকে। শিশু ও কিশোরী মিলিয়ে মোট ১২২ জন হোমে থাকে। হোমের নৈশ প্রহরী গৌরাঙ্গ লাহার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করেছেন অভিভাবকরা।
এদিন বিকেলে হোমের সামনে প্রহৃত ছাত্রীর অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখান। ঘটনার খবর পেয়ে হোমে গিয়েছিলেন জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক সনৎ ঘোষ। তিনি বলেন, “অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হিলি থানার ওসি সন্দীপ সুব্বা বলেন, “অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
অভিযুক্ত গৌরাঙ্গ লাহা দাবি করেছেন, “অত্যাচারের অভিযোগ ঠিক নয়। কথা না শোনায় ছাত্রীদের শাসন করেছি মাত্র।” হোমের সুপার কুশি মণ্ডল ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, “নৈশপ্রহরীর ওই আচরণ ঠিক হয়নি। কর্তৃপক্ষকে সব জানাচ্ছি।”
এদিন অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করেন, হোমে কোনও নজরদারি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক মেয়েদের মারধর করা হয়। লাঠির আঘাতে মেয়েদের পায়ে ও পেছনে কালশিটে হয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত বলেন, “আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy