শিলিগুড়ি আদালতের স্থায়ী ভবন তৈরি নিয়ে জট কাটতে চলেছে বলে দাবি করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৃহস্পতিবার আইনজীবী ও আদালতের মুহুরিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। প্রথমে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং পরে শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনে দু’দফায় বৈঠক করেন মন্ত্রী। আগামী ৬ মাসের মধ্যে নতুন ভবন তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমি আইনজীবী ও মুহুরিদের সঙ্গে কথা বলেছি। এর আগে পূর্ত দফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও আমার বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে যেখানে বার অ্যাসোসিয়েশনের ভবন, তার সামনে নতুন ভবন হবে বলে ঠিক হয়েছে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে ভবন তৈরির কাজ করে ফেলা হবে।” মুহুরিদের নতুন অফিস তৈরি করার ব্যপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর অর্থ সাহায্য করবে বলেও এদিন গৌতমবাবু এদিন জানান। পুরো কাজটি পূর্ত দফতর করবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
দেরিতে হলেও মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধানের দিকে এগোনোয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন দে। চন্দনবাবু বলেন, “আমরা আগেই মন্ত্রীর কাছে শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন তৈরির ব্যপারে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলাম। মুহুরিদের পুনর্বাসন দিয়ে সেই জায়গায় প্রস্তাবিত ভবনের অংশ তৈরি প্রস্তাবও পেয়েছিলাম হাইকোর্টের তরফে। তা মন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল। উনি সেই অনুযায়ী সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এদিন বৈঠকের পর সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।” মন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েই তাঁরা আগের অবস্থান থেকে সরে আসছেন বলে জানান মুহুরি অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরকার। তিনি বলেন, “আমরা মন্ত্রীর কাছে আগে নতুন ভবন তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। উনি তা মেনে নিয়েছেন। আমরাও বৃহত্তর স্বার্থে পুরোনো জায়গা থেকে সরতে রাজি হয়েছি।”
এর আগে শিলিগুড়ি আদালতের বর্তমান ভবন চত্বরেই স্থায়ী ভবন তৈরির দাবিতে টানা দেড়মাস কর্মবিরতি চালিয়েছিলেন শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল ও প্রাক্তন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে ২০১২ সালে আদালত চত্বরেই স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস হয়েছিল। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ভবন অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। তাতেই বেঁকে বসেন আইনজীবীরা। অন্য কোনও জায়গায় কোর্ট ভবন সরিয়ে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁরা যাবেন না বলে জানিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন। সে সময় দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও বার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়ে সদস্যদের আশ্বাস দেন। চলতি মাসেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর শিলিগুড়ি আদালত পরিদর্শন করে। কর্মবিরতি তুলতে আইনজীবীদের ‘অনুরোধ’ করেন প্রধান বিচারপতিসহ হাইকোর্টের বিচারপতিদের প্রতিনিধি দল। তার পরেই কর্মবিরতি তুলে নেন আইনজীবীরা।
আইনজীবীদের দাবি, প্রধান বিচারপতি তাঁদের জানান, নতুন ভবন তৈরি করতে হলে, ৭ তলা ভবন তৈরি করতে হবে। তার জন্য বর্তমান আদালত চত্বরে মুহুরিদের ঘরটি ভাঙতে হবে। এর পরে আইনজীবীরা মুহুরিদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাঁদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলে কোনও সিদ্ধান্ত জানাবেন না। সেই মত এদিন বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy