প্রায় এক হাঁটু জলের তলায় ডুবে রয়েছে রাস্তা। বাড়ির উঠোন খুঁজে পাওয়া ভার। ফুটবল খেলার মাঠ আস্ত পুকুরের চেহারা নিয়েছে।
মরা তোর্সার জল উপচে এ ভাবেই প্লাবিত হয়ে পড়েছে কোচবিহার সদর মহকুমার টাকাগছের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে রীতি মতো দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। বুধবার রাতে জল ঢুকে পড়ায় একই ভাবে প্লাবিত হয়ে পড়ে তোর্সা লাগোয়া মধুপুর, মালতিগুড়ি, কামরাঙাগুড়ি, ফাঁসিরঘাট, ঘুঘুমারি চরের কিছু নতুন এলাকা। সব মিলিয়ে জলবন্দি হয়ে পড়েন অন্তত ৫ হাজার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে রাতে ফের পাহাড়ে বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। এ দিন বিকেলে কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা বলেন, “দিনভর বৃষ্টি না হওয়ায় নদীর জল কমতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে তিন হাজার লোক এখনও দুর্ভোগের মুখে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা হবে।”
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, কাড়িশালে বর্ষার মুখে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মাঝেমধ্যেই ওই কাজ ব্যাহত হয়ে পড়ছে। অন্য এলাকাগুলির মধ্যে টাকাগছের ভোগান্তি মেটাতে গ্রাম লাগোয়া মরা তোর্সার খাত সংস্কার করা দরকার। অথচ ওই ব্যাপারে কোন মহলের হেলদোল নেই বলে তাঁদের অভিযোগ।
বাসিন্দারা জানান, এক সময় মরা তোর্সার নদী খাতের নাব্যতা ছিল। ফলে বর্ষার মরসুমে তোর্সার জল ওই খাতে ঢুকলেও তখনই সমস্যা হতো না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ে এক রাতের বেশি বৃষ্টি হলেই ফুঁসে ওঠা তোর্সার জল মরা তোর্সায় ঢুকে পড়ছে। তাতে প্লাবিত হয়ে পড়ছে টাকাগছের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফি বছর বর্ষার মরসুমে একাধিকবার ভোগান্তি পোহাতে হয় বাসিন্দাদের। তার পরেও ওই খাত সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেই। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি বলে জানা তাঁরা। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা অবশ্য বলেন, “মরা তোর্সার খাত সংস্কার করে নাব্যতা বাড়ানো দরকার। ওই ব্যাপারে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
টাকাগছের বাসিন্দা সোবান আলি বলেন, “বুধবার রাত দশটা নাগাদ মরা তোর্সার জল ঢুকতে শুরু করে। সকালে উঠে দেখি বাড়ির উঠোন, রাস্তা সব জলে একাকার হয়ে গিয়েছে। মরা তোর্সার জল ধারণ ক্ষমতা বেশী হলে এত দ্রুত ওই সমস্যা হতো না।” সালেমা বিবি নামে এলাকার অন্য এক বাসিন্দার কথায়, “প্রতি বার বর্ষার সময়ে এমন ভোগান্তি একাধিক বার পোহাতে হয়। যাতায়াত, রান্নাবান্না সবেতেই ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বার এ রকম টানা বৃষ্টি চললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy