রায়গঞ্জ জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক (সিজেএম) সব্যসাচী চট্টরাজের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি, দুর্ব্যহার সহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁর বদলি চেয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন আইনজীবীরা। ২৪ ঘন্টার মধ্যে শুক্রবার কর্মবিরতি তুলে নিলেন আইনজীবীরা। তবে একই অভিযোগ ও দাবিতে এ দিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব্যসাচীবাবুর এজলাস বয়কট করারও ডাক দিলেন আইনজীবীরা। এ দিন দুপুরে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা বৈঠক করে ওই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘সব্যসাচীবাবুকে বদলির দাবিতে আইনজীবীরা টানা কর্মবিরতি চালিয়ে গেলে আদালতের সমস্ত বিচারকের এজলাসে অভিযুক্ত ও বিচারপ্রার্থীরা বিচার না পেয়ে সমস্যা ও হয়রানির মুখে পড়তে পারেন। আমরা সেই আশঙ্কা করেই কর্মবিরতি তুলে নিয়েছি। তবে সব্যসাচীবাবুকে বদলি না করা পর্যন্ত তাঁর এজলাস বয়কট করবেন আইনজীবীরা।’’
অভিযুক্ত ও বিচারপ্রার্থীদের সমস্যার কথা না ভেবে তা হলে কেন অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল? নারায়ণবাবুর দাবি, ‘‘পরিস্থিতি বিচার করে অ্যাসোসিয়েশন প্রথমে টানা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থেই এদিন আদালতের বাকি বিচারকের এজলাসগুলিতে আইনজীবীরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শুধু সব্যসাচীবাবুর এজলাস বয়কট করার পক্ষেই সকলে মত দিয়েছেন।’’
উল্লেখ্য, এদিন সরস্বতী পুজো উপলক্ষে হাইকোর্টের নির্দেশে আদালত বন্ধ থাকলেও আদালতের আগাম নির্দেশ ও গত ২৪ ঘন্টায় রায়গঞ্জ মহকুমা এলাকা থেকে বিভিন্ন অভিযোগে ধৃতদের সব্যসাচীবাবুর আদালতে তোলা হয়। নতুন ও পুরনো মিলিয়ে এদিন খুন, বধূ নির্যাতন, অপহরণ সহ বিভিন্ন মামলার প্রায় ধৃত ২০ জন অভিযুক্তকে সব্যসাচীবাবুর এজলাসে তোলা হয়। তাঁর আদালতে সরকারি আইনজীবী নিলাদ্রী সরকার ছাড়া কোনও আইনজীবী হাজির হননি। ফলে সব্যসাচীবাবুর নির্দেশে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তরা নিজেরাই জামিনের সপক্ষে সওয়াল করেন। দিনের শেষে সব্যসাচীবাবু অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়াই বধূ নির্যাতনে ধৃত দুই অভিযুক্তের ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন। সব্যসাচীবাবু অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, আইনজীবীরা কর্মবিরতি চালিয়ে গেলে বিচারপ্রার্থী ও অভিযুক্তরা সরাসরি তাঁর এজলাসে জামিন সহ নিজেদের স্বপক্ষে বক্তব্য পেশ করতে পারেন। আইন মেনে তিনি তাঁদের পাশে থাকবেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জের তুলসীতলা এলাকায় নিজের বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রায়গঞ্জ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশিস বসুর স্ত্রী রেণুকা বসু (৪৩)। দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়েরের অভিযোগ করার অনুমতি চায় পুলিশ। দেবাশিসবাবুর জামিনের আবেদন নাকচ করে সেই অনুমতি দেন সব্যসাচীবাবু। তারপরেই আইনজীবীরা কর্মবিরতির ডাক দেন। তবে নারায়ণবাবুর দাবি, দেবাশিসবাবুর ঘটনার সঙ্গে এই কর্মবিরতির ডাকের কোনও সরাসরি যোগ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy