Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শিলিগুড়ির দুই সিপিএম নেতার রক্ষী প্রত্যাহার

দলের দুই নেতার দেহরক্ষী প্রত্যাহারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে ঘিরে শাসক দলকে বিঁধল সিপিএম। ভোটের সময়ে বাড়তি পুলিশকর্মী প্রয়োজন, এই যুক্তিতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং দার্জিলিং জেলা সিপিএমের কার্যনিবাহী সম্পাদক জীবেশ সরকারের সরকারি দেহরক্ষীদের গত সপ্তাহে প্রত্যাহার করেছে পুলিশ-প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪২
Share: Save:

দলের দুই নেতার দেহরক্ষী প্রত্যাহারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে ঘিরে শাসক দলকে বিঁধল সিপিএম।

ভোটের সময়ে বাড়তি পুলিশকর্মী প্রয়োজন, এই যুক্তিতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং দার্জিলিং জেলা সিপিএমের কার্যনিবাহী সম্পাদক জীবেশ সরকারের সরকারি দেহরক্ষীদের গত সপ্তাহে প্রত্যাহার করেছে পুলিশ-প্রশাসন। তৃণমূলের হস্তক্ষেপেই পুলিশ-প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। অশোকবাবুর কথায়, “আমরা নিরাপত্তা রক্ষী চাইনি। কিন্তু নির্দিষ্ট কারণে আমাদের রক্ষী দেওয়া হতো। এখন পুলিশ শাসক দলের নির্দেশে দেহরক্ষী তুলে নিয়েছে। এটা কাম্য নয়।” প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। পক্ষপাতের অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশও।

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১১-র বিধানসভা ভোটের পরে গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যাঁদের উপরে হামলার আশঙ্কা রয়েছে এমন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রীদের একটি তালিকা তৈরি করে রাজ্য সরকার। তাঁদের দেহরক্ষী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই তালিকায় অশোকবাবু এবং জীবেশবাবুর নাম ছিল। এত দিন সব সময় এক জন করে সরকারি দেহরক্ষী তাঁদের সঙ্গে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোটের জন্য প্রচুর বাড়তি পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করতে হয়েছে। তাই আপাতত সবাইকে দেহরক্ষী দেওয়া যাচ্ছে না। তবে যাঁদের দেহরক্ষী তুলে নেওয়া হল, পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখবে। ভোটের পরে পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনা করে ঠিক করা হবে, কাদের ফের দেহরক্ষী দেওয়া হবে।”

‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর চিফ পদে ইস্তফা দিতেই দার্জিলিং পাহাড়ে পুলিশ-প্রশাসন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গের দেহরক্ষী তুলে নিয়েছিল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সিপিএমের দাবি, রাজনৈতিক কারণে তাদের দুই নেতার রক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে। জীবেশবাবুর কটাক্ষ, “ভোটের সময়েই হামলার সম্ভাবনা বেশি। তা হলে এখন দেহরক্ষী তোলার যুক্তি কী?” তাঁর দলের একাধিক নেতা-কর্মীর বক্তব্য, “ভোটই যদি কারণ হবে, তা হলে পাহাড়ে-সমতলের নানা জায়গায় কয়েকজন তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেহরক্ষী রইলেন কী ভাবে?” এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং পাহাড়ের তৃণমূল নেতা বিন্নি শর্মা, রাজেন মুখিয়ার উদাহরণ টেনেছেন তাঁরা।

পুলিশ অবশ্য জানাচ্ছে, গুরুঙ্গ ফের জিটিএ চিফ হতেই তাঁকে দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিঙের এসপি অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “পাহাড়ে অনেক নেতার দেহরক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে। তাতে শাসক-বিরোধী বাছাবাছি করা হয়নি। যাঁদের ক্ষেত্রে এখনও হামলা হওয়া-সহ নানা ঝুঁকি রয়ে গিয়েছে, তাঁদের রক্ষী বহাল রাখা হয়েছে। এ নিয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ ঠিক নয়।” মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। পুলিশ-প্রশাসনের বিষয়। এ নিয়ে আমাদের দোষারোপ করে লাভ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lok sabha election siliguri cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE