Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সভায় ভিড় দেখে মজবুত সংগঠনের দাবি বিজেপি-র

সংগঠনের ভিত্তি যাচাই করতে দলের রাজ্য সভাপতিকে এনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। সভার ভিড় দেখে সেই পরীক্ষায় তারা সফল হয়েছেন বলে দলের নেতারা দাবি করেছেন।

জলপাইগুড়িতে রাহুল সিংহের জনসভা। ছবি: সন্দীপ পাল।

জলপাইগুড়িতে রাহুল সিংহের জনসভা। ছবি: সন্দীপ পাল।

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য
রাজগঞ্জ শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৪
Share: Save:

সংগঠনের ভিত্তি যাচাই করতে দলের রাজ্য সভাপতিকে এনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। সভার ভিড় দেখে সেই পরীক্ষায় তারা সফল হয়েছেন বলে দলের নেতারা দাবি করেছেন। ‘বাংলা জাগাও, বাংলা বাঁচাও’ স্লোগান বেঁধে রায়গঞ্জের মগরাডাঙি ফুটবল মাঠে শুক্রবার বিজেপির জনসভা ছিল। দলের নেতাদের দাবি এ দিনের সভাতে ভিড় উপচে পড়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, অনেক চিন্তাভাবনা করেই রাজগঞ্জের মগরাডাঙিকে সভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে রাজগঞ্জ বিধানসভা থেকেই জলপাইগুড়ি জেলায় ‘পরিবর্তনে’র শুরু হয়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকা তারপর থেকে রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূলের খাসতালুক বলে পরিচিত। সে কারণে রাজগঞ্জে সংগঠন বাড়িয়ে তৃণমূলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়াই দলের লক্ষ্য বলে দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু এলাকায় তৃণমূল বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপির কতটা সমর্থন রয়েছে তাও যাচাই করে নেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছে।

এদিন প্রত্যন্ত গ্রামের মাঠ-ভরা ভিড়ে সংখ্যালঘু বাসিন্দাদের উপস্থিতি বিজেপি নেতাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। এ দিন মঞ্চে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় তিনশো কর্মী সমর্থক তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ সভায় বলেন, “এখন তো এখানে কোনও ভোট নেই। তবু রাজ্যের অব্যবস্থার পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে।”

কৃষি প্রধান এই এলাকায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণের লক্ষ্যে কৃষকদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিজেপি সভাপতি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টেছে, কিন্তু শাসন পাল্টায়নি। ইঞ্চি মেপে সিপিএমের পথে সরকার পরিচালনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের কৃষকদকে ফসলের অভাবি বিক্রি করতে হচ্ছে। হিমঘরের সমস্যা রয়েছে। সরকার বলছে টাকা নেই, অথচ বিভিন্ন ক্লাবকে দান করে বেড়াচ্ছে, উৎসব করছে।”

জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলায় ২০০৯ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী জয়লাভ করে। সে বার বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন মাত্র ৮ হাজার ভোট। যদিও, গত লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ভোটে হারে বিজেপির ভোট বেড়ে ২৩ হাজার হয়। এ দিন সভার পরে দলের জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিক দাবি করে বলেন, “রাজগঞ্জ বিধানসভা এলাকার ১৬৫টি বুথে দলের সংগঠন তৈরি হয়েছে। সিপিএম সমর্থকরা বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছেন। সংখ্যালঘু বাসিন্দারা ক্রমাগত দলে যোগ দিচ্ছেন।”

সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ তথা রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মহেন্দ্র রায় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিতে পারেননি। তিনি বলেন, “ওরা (বিজেপি) কেন্দ্রীয় সরকারে আছে। বিভিন্ন প্রলোভন দিচ্ছে। কিছু মানুষ ওদের দিকে যাচ্ছে। তা ছাড়া তৃণমূলের লাগাতার সন্ত্রাসের ফলেও নিরাপত্তার জন্য অনেকে যাচ্ছেন।” যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এদিনের বিজেপির সভাকে গুরুত্ব দিতে চান না। দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “যে কেউ যেখানে ইচ্ছে সভা করতে পারে। কিন্তু আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও রাজগঞ্জ আমাদের দখলে থাকবে।” এ দিন কুকুরজান এলাকার কৃষক মহম্মদ সামিন, ইয়াকুব আলি এই প্রথম বিজেপির সভায় এসেছেন বলে দাবি করেছেন। সামিন বলেন, “বামপন্থী দল করতাম। তৃণমূল সমর্থকরা মারছে, কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” তৃণমূলের তরফে অবশ্য সন্ত্রাসের অভিযোগকে বিজেপির মনগড়া বলে দাবি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

biswajyoti bhattacharya raiganj bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE