সাধারণ কর্মী সমর্থকদের যোগাযোগ বাড়াতে মোবাইল অ্যাপলিকেশন ‘হোয়াটস অ্যাপ’কে মাধ্যম করেছে শিলিগুড়ির বিজেপি নেতৃত্ব। জনপ্রিয় এই মোবাইল অ্যাপলিকেশনে তৈরি হয়েছে ‘বিজেপি শিলিগুড়ি’ এবং ‘বিজেওয়াইএম’ নামে দু’টি গ্রুপ। এই মোবাইল অ্যাপলিকেশনে কেউ কোনও বক্তব্য জানালে, নিমিষের মধ্যেই গ্রুপের অনান্য সদস্যদের মোবাইলে পৌঁছে যাবে। শুধু লেখা নয়, কয়েক মুহূর্তের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে ছবি, ভিডিও পাঠানো যায় হোয়াটস অ্যাপে। শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা বা ছবি নয়, চলছে রাজনৈতিক ‘জোকসে’রও আদান প্রদান। বেশ কয়েকটি জোকস পোস্ট করেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও।
বিজেপি সূত্রের খবর, সামনেই শিলিগুড়িতে পুরসভার ভোট। সে কারণে প্রতিদিনিই শহরে নানা কর্মসূচি হচ্ছে দলের। দলের নেতারা জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে দলের সর্বস্তরে ‘সমন্বয়’ বাড়ানো প্রধান লক্ষ্য। তাই গতানুগতিক সভা, ঘরোয়া বৈঠকের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সুযোগ নিতেও উদ্যোগী বিজেপির স্থানীয় নেতারা। দল সূত্রের খবর, সাড়াও মিলেছে ভালই। গত সোমবারই সংসদে মদন মিত্রের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল সাংসদদের প্রতিবাদের পাল্টা নিজে কী বলেছেন তা হোয়াট্স অ্যাপ গ্রুপে জানিয়ে দিয়েছেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। সংসদে নিজের বক্তৃতার ছবিও গ্রুপে ‘আপলোড’ করেছেন তিনি। বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন বসুও গ্রুপে রয়েছেন। দলের সদস্য সংখ্যার কাজ কতদূর এগিয়েছে, কর্মীরা সকলে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা তা জানতে চেয়ে প্রায়দিন সকালেই গ্রুপে ‘কমেন্ট’ করেছেন রথীনবাবু। সভাপতির নির্দেশ মেনে সংশ্লিষ্ট নেতা কর্মীরা তাঁদের রিপোর্টও দিয়েছেন গ্রুপে। কী ভাবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান জোরদার করা যাবে তার উপায়ও বাতলানো হয়েছে ওই গ্রুপে।
বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন বসুর কথায়, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেও প্রযুক্তির ব্যবহার করে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। আমরাও সেই পথ অনুসরণ করেছি। শহরবাসীরা তাঁদের নানা সমস্যা নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁরাও এর মাধ্যমে সহজেই নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারবেন।”
গত ১৪ ডিসেম্বর গ্রুপটি তৈরি হয়েছে। বিজেপির যুব সংগঠনের জেলা কমিটির সহ সভাপতি আনন্দ বনশালি গ্রুপটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। আনন্দের কথায়, “এই অ্যাপলিকেশনে দলের নেতৃত্বরা সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারবেন। সাধারণ কর্মী সমর্থকরা কী ভাবছেন তাও সহজেই নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে যাবে।” বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, অনেক সময়ে কর্মীরা নানা সমস্যা অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তাব দেন। সব সময়ে সকলের পক্ষে পার্টি অফিসে এসে অথবা মোবাইলে সেই সমস্যার কথা সহজে বোঝানো সম্ভব হয় না। হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে যে কেউ নিজেদের প্রস্তাব দিলে তা সহজেই নেতৃত্বরা জেনে নিতে পারবেন।
লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় থেকেই সামাজিক বন্ধুত্বের সাইট ‘ফেসবুক’, ‘ট্যুইটার’ ব্যবহার করেছিল বিজেপি। তাতে যুব প্রজন্মের থেকে বিপুল সাড়া মিলেছিল বলে দলের দাবি। সেই মডেলই এবার শিলিগুড়ি পুরসভা ভোটের প্রচারেও ব্যবহার করতে শুরু করেছে বিজেপি। একই রকম পরিকল্পনা তাদেরও রয়েছে বলে জানিয়েছে বামেরাও। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “ফেসবুক, টুইটারে আমরাও প্রচার চালাচ্ছি। এখনও রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটে তুমুল প্রচার চলছে। শিলিগুড়ি পুরসভা ভোটের প্রচারের সময়েও ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
শিলিগুড়ির তৃণমূলের কর্মীদেরও মধ্যেও যোগাযোগের জন্য হোয়াটস অ্যাপে গ্রুপ থাকলেও, তা রাজনৈতিক নয় বলে দাবি করেছেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ পাল। কৃষ্ণবাবুও হোয়াটস অ্যাপ-এ স্বচ্ছন্দ। তিনি বলেন, “হোয়াটস অ্যাপে দলের সরাসরি কোনও গ্রুপ না থাকলেও ফেসবুকে রয়েছে। তাতে প্রতিদিনই সদস্যের সংখ্যা বাড়ছে। যুব প্রজন্ম থেকে শুরু করে সর্বস্তরের বাসিন্দারা আমাদের সঙ্গে রয়েছে, সেটা ফেসবুকের সেই পেজেও প্রমাণ মেলে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy