Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেতু গড়েছেন বিজেপি নেতা, বিতর্ক উদ্বোধনে

ছ’মাসেরও বেশি সকলের চোখের সামনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেতু গড়া হয়েছে। জেলা পরিষদ, প্রশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের নেতা তা উদ্বোধন করতেই হইচই শুরু হল।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৯
Share: Save:

ছ’মাসেরও বেশি সকলের চোখের সামনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেতু গড়া হয়েছে। জেলা পরিষদ, প্রশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের নেতা তা উদ্বোধন করতেই হইচই শুরু হল।

শুক্রবার কোচবিহারে পুন্ডিবাড়িতে খুটামারা নদীর উপরে ওই কংক্রিটের সেতুর উদ্বোধন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর দলেরই জেলা সম্পাদক সুকুমার রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই সেতু গড়েছেন। রাহুলবাবুর কটাক্ষ, “রাজ্য কাজ করছে না বলেই মানুষ নিজস্ব উদ্যোগে সেতু তৈরিতে নেমেছেন। এটা একটা দৃষ্টান্ত।”

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “সেতু তৈরির জন্য প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়।” তাঁর দাবি, “ওই সেতু নিয়ে আমার কাছে খবর ছিল না। সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।” প্রশাসনের তরফে দাবি, বিষয়টি জানা ছিল না। সেচ দফতরেরও দাবি, সেতু তৈরির খবর তারা জানত না।

পুন্ডিবাড়িতে ওই জায়গায় সেতুর দাবি অনেক দিনই। কিন্তু ছ’মাসেরও বেশি সময় ধরে যখন সেতু গড়া হচ্ছে, কেউই কী করে তা টের পেলেন না, সেই প্রশ্ন এড়ানো যাচ্ছে না। সুকুমারবাবু অবশ্য জানান, পুন্ডিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে দিয়েই সেতুর পরিকল্পনা করিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “নদীর ওই পারে ৩৬ জন মিলে ৯ বিঘা জমি কিনেছি। সবার অংশের টাকা দিয়েই সেতু হয়েছে। ও পাশে হাজারখানেক মানুষ থাকেন, তাঁদেরও সেতুর প্রয়োজন ছিল।”

আর সকলে অস্বীকার করলেও পুন্ডিবাড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা গোপাল সরকার অবশ্য স্বীকার করেছেন, সেতু তৈরির কথা তিনি জানতেন। তাঁর দাবি, “সুকুমার জমি কিনে প্লট করে বিক্রি করেছে। সেই জন্যই নির্মাণ সহায়ককে দিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি পরিকল্পনা করান। অনুমতি নেওয়া হয়নি।” তবে সেতু তৈরি হওয়ায় যে এলাকার মানুষের উপকার তা তিনি অস্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, “সেতু না থাকায় গাড়ি চলাচল করতে পারত না। গ্রামবাসীর উপকারই হল।”

তা হলে পঞ্চায়েত নিজে উদ্যোগী হয়নি কেন? উপপ্রধানের বক্তব্য, “আমাদের কাছে কেউ সেতুর দাবি জানায়নি।” গ্রামবাসীরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। সেতু উদ্বোধন দেখতে এসে নুরজাহান বিবি, কৃষ্ণা দাস, আরতি সরকারেরা বলেন, “অনেক দিন ধরে কষ্টে ছিলাম। বহু বার সেতুর জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্জি জানিয়েছি। কেউ কিছু করেনি। সেতু হওয়ায় কষ্ট ঘুচল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

namitesh ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE