Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৪তম জন্মতিথি পালন করল জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। ৩১ ডিসেম্বর তিথি দিবসে সিল্কের ধুতি, চাদর ও শালে সাজিয়ে তোলা হয় স্বামীজির প্রতিকৃতি।

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৪৫
Share: Save:

জন্মোৎসবে জলপাইগুড়ি

স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৪তম জন্মতিথি পালন করল জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। ৩১ ডিসেম্বর তিথি দিবসে সিল্কের ধুতি, চাদর ও শালে সাজিয়ে তোলা হয় স্বামীজির প্রতিকৃতি। ভোর সাড়ে চারটায় শুরু হয় মঙ্গলারতি। সন্ন্যাসী ব্রহ্মচারী, আবাসিক ছাত্র ও ভক্ত অনুরাগীরা পাঠ করেন বেদ মন্ত্র, পরিবেশিত হয় ভবনে ভবনে। জন্মতিথির প্রাতঃরাশে নিবেদন করা হয় কেক, পেস্ট্রি, চা, কফি, ফল-মিষ্টি ও পুডিং। গর্ভগৃহে ষোড়শোপচারে পূজিত হন ঠাকুর, শ্রীশ্রীমা ও স্বামীজি। বিবেকানন্দের জীবন ও বাণী পাঠ করে শোনান মঠ ও মিশনের সম্পাদক স্বামী অক্ষয়ানন্দ। হয় হোম। প্রদান করা হয় পুষ্পাঞ্জলি। বিশেষ দিনে মধ্যাহ্ন ভোজের তালিকায় ছিল লুচি ও পোলাও। সন্ধ্যারতির পর পাঠ করা হয় স্বামীজির স্তোত্র। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত গেয়ে শোনান দেবপ্রিয় সরকার। তবলায় অনিন্দ্য শিকদার। পরিবেশিত হয় শ্যামাসঙ্গীত, ভজন এবং স্বামীজির প্রিয় গানগুলি। নৈশাহারে সাজিয়ে দেওয়া হয় স্বামীজির প্রিয় পদগুলি। আগত ভক্ত অনুরাগীদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

বিবেকানন্দের ভারত চেতনা

সম্প্রতি মাল, পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের উদ্যোগে হয়ে গেল ‘স্বামী বিবেকানন্দের ভারত চেতনা’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনাসভা। মুখ্যবক্তা স্বামী আত্মবোধানন্দ (সহ-সম্পাদক শিলিগুড়ি রামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রম) জানান, বেদান্তের ব্যবহারিক দিকের কথা বিবেকানন্দ বারবার স্মরণ করিয়েছেন, গুরুত্ব দিয়েছেন। যুব সম্প্রদায় সেই ভাবনায় দীক্ষিত হলে ভারতের ঐতিহ্য, ইতিহাস সঠিক ভাবে বুঝতে পারবে, মমত্ব বাড়বে। তাঁর মতে, একাত্ম ভাবনার দ্বারা অনুপ্রাণিত বিবেকানন্দ এই আদর্শের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ‘শিবজ্ঞানে জীবসেবা’-র কথা যদি উপলব্ধি করা যায়, আত্মস্থ করা যায়, তবে অসহিষ্ণুতা, হানাহানি বন্ধ হবে। যুব সমাজকে সচেতন হতে বলেছেন তিনি। বিবেকানন্দ বিশ্বের দরবারে ভারতের কৃষ্টি, দর্শন, ইতিহাসকে যে ভাবে তুলে ধরেছিলেন তা আলোচ্য বিষয়ে স্থান পেয়েছে। বিবেকানন্দের বাণী পাঠ করে শোনান নারায়ণ হালদার এবং ফিরোজ হক। বিবেকানন্দ রচিত গান পরিবেশন করেন অধ্যাপিকা মৌমিতা মুখোপাধ্যায়, সোহম দাস ও তমালিকা ভট্টাচার্য। বিবেকানন্দের দেশ ভাবনা, শিক্ষা ভাবনা, ভারত গঠনে যুব সম্প্রদায়ের ভূমিকা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপিকা অর্পিতা দাশগুপ্ত, চন্দন বর্মন, কৌশিক দাস ও মহসিনা বেগম। স্বামীজি যদি এই সময়টায় থাকতেন তাহলে সমকালীন সমাজ ভাবনা তাঁর কী রকম হত—এ বিষয়টিকে সামনে রেখে শ্রুতি নাটক পরিবেশন করেন অধ্যাপক চন্দন খাঁ এবং অধ্যাপক স্বপন ভৌমিক।

লেখা ও ছবি: অনিতা দত্ত

আলোচনা সভা

‘নাটক ও আমরা’ বিষয়ক আলোচনা সভা হল কোচবিহারে। বৃহস্পতিবার একটি হোটেলের সভাকক্ষে সকাল ১০টা থেকে শুরু দু’ঘণ্টার ওই আলোচনায় মুখ্য আলোচক ছিলেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় ও চার্বাক নাট্যগোষ্ঠীর সুবীর নন্দী। উদ্যোক্তা স্কেটেড নাট্যগোষ্ঠীর কর্তা কল্যাণময় দাস বলেন, “কোচবিহারে শিল্পী ও নাট্যকর্মীরা আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন।” বুধবার কোচবিহার রবীন্দ্র ভবনে সব্যসাচী চক্রবর্তী অভিনীত একটি নাটকও মঞ্চস্থ হয়। নাট্যপ্রেমী দর্শকদের ভাল ভিড়ও হয়েছিল।

ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

কথা-সুরের ঝর্নায় সলিল চৌধুরী

সঙ্গীতশিল্পী সুখময় মজুমদার ও তাঁর ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে মালদহের সানাউল্লাহ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘কথায় সুরে সলিলদা’। সম্মেলক কণ্ঠে ছাত্রছাত্রীদের নিবেদনে ছিল ‘জাগো মোহন প্রীতম’ এবং ‘ও ভাইরে ভাই, ও আয় রে আয়’। শিক্ষার্থীরা একক কণ্ঠে শোনান ‘হায় হায় প্রাণ যায়’, ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা’, ‘না জিয়া লাগে না’, ‘ও মোর ময়না গো’-র মতো একের পর এক জনপ্রিয় গানগুলি। ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবেশিত গানগুলির মধ্যে ছিল প্রায় অশ্রুত ‘আমার এ বেদন মাঝে’। অনুষ্ঠানের মুখ্য আকর্ষণ ছিল সুখময় মজুমদার পরিচালিত আলেখ্য ‘কথায় সুরে সলিলদা’। হিন্দি ও বাংলা আধুনিক গান নিয়ে নির্মিত আলেখ্যটিতে ছিল গীতিকার ও সুরকার সলিল চৌধুরীর বহুমুখীতার আভাস। অংশ নেন সর্বাণী দাস, কোয়েল সাহাকুণ্ডু, সৈকত বসাক, সুদক্ষিণা ভগত ও সুকান্ত মজুমদার। ভাষ্যপর্বে বর্ণালী মৈত্র। তবলায় সঙ্গ দেন বিভাস রায়। গিটারে সঞ্জীব দাস। কী-বোর্ডে অনিন্দ্য দত্ত এবং হ্যান্ডসোনিকে ছিলেন বিশ্বজিৎ দাস।

নাচে-গানে বর্ষপূর্তি দীপ্তার্কের

শিশুকল্যাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত জলপাইগুড়ি ‘দীপ্তার্ক যুব শক্তি জাগরণ’ তাদের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করেছিল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। সূচনা সঙ্গীত ‘আলোকের এই ঝর্ণা ধারায়’ পরিবেশন করে অনুভব হোমের শিশুরা। তাদের নিবেদনে ছিল একক ও সম্মেলক নৃত্যানুষ্ঠানও। সিদ্ধার্থ দাস সংস্থা বিষয়ক স্বরচিত কবিতা ‘দীপ্তার্ক’ পাঠ করেন। পৃথা দাশগুপ্ত ‘আমার সকল রসের ধারা’, গার্গী অধিকারী ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। ‘পিন্দরে পলাশের বন’ লোকগানের সঙ্গে নীলাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের নৃত্যরচনা চমৎকার। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘আমার পুণ্য’ আবৃত্তি করে শোনান সৌপর্ণ অধিকারী। শুভম রায় ‘আগুনের পরশমণি’, সুলগ্না ঘটক ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা’ এবং চৈতী ঘোষ ‘জাগরণে যায় বিভাবরী’ এবং ‘আমার ভিতর ও বাহিরে’ গেয়ে শোনান। রবীন্দ্রগান শোনালেন ভাস্বতী সেনগুপ্ত। স্বর্ণদীপা মুখোপাধ্যায়ের নৃত্য সকলের মন জয় করে। ‘উজান’ নাট্যদলের পরিবেশনায় ছিল শ্রুতি নাটক ‘মুক্তি’। ডালিয়া চৌধুরী রচিত এই নাটকে আবহসঙ্গীতে ছিলেন সায়ন শীল।

বালুরঘাট নাট্যমন্দিরে গিরীশ-স্মরণ

সম্প্রতি বালুরঘাট নাট্যমন্দিরের আয়োজনে পালিত হল নাট্যমন্দিরের পরিচালক ও অভিনেতা গিরীশ সাহার স্মরণবাসর। সূর্যশিকার, রাজদর্শন, অমৃত অতীত-এ তাঁর অভিনয় দর্শকরা আজও মনে রেখেছে। শ্রেষ্ঠ অভিনয় ‘ঝুমুর’ নাটকে মদনধোপা চরিত্রে। সারা ভারত নাট্য প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয় তাঁরই নির্দেশিত নাটক ‘তীর্থযাত্রী। প্রয়াত হন ২১ ডিসেম্বর। স্মৃতিতর্পণ করা হয় প্রয়াত অভিনেতা ও সংস্থার আজীবন সদস্য আশিস বসুর (প্রয়াত হন ১৮ ডিসেম্বর) উদ্দেশ্যেও। অভিনেতার পাশাপাশি ক্রীড়াবিদ হিসেবেও তার সুনাম ছিল। শহরের নাট্যদলগুলি এই দুই ব্যক্তিত্বের স্মৃতিচারণা করেন। সংস্থা থেকে শোকপ্রস্তাব তুলে দেওয়া হয় দুই পরিবারের হাতে।

প্রবন্ধে রাজবাড়ির মহিলাদের সাহিত্য

রায়গঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘চয়ন’ (সম্পাদনা : অরুণ চক্রবর্তী, সৌরেন চৌধুরী এবং তপন রায়)-এর এই সংখ্যায় স্থান পেয়েছে প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা এবং কবি বেণু দত্ত রায় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। প্রবন্ধগুলিতে উঠে এসেছে কোচবিহারের বৈষ্ণবধারার প্রসারে শঙ্কর দেবের ভূমিকা এবং রাজপরিবারের মহিলাদের সাহিত্যচর্চা। লিখেছেন আনন্দগোপাল ঘোষ, জ্যোতির্ময় রায় এবং সঞ্চিতা দাস। ছোটগল্প লিখেছেন অর্পিতা গোস্বামী চৌধুরী এবং তপন রায়। কবিতা পর্বে মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস, অরুণ চক্রবর্তী, সুনন্দা গোস্বামী, সঙ্গীতা পাল এবং সুনীল চন্দ-সহ অন্যরা অনুভূতির অজস্র ছন্দ তৈরি করেছেন। অনুরণন তৈরি করে শর্মিষ্ঠা ঘোষ এবং মহুয়া শিকদারের কবিতা।

লেখা ও ছবি: সুদীপ দত্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE