Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কৃতি যেখানে যেমন

জলপাইগুড়িবাসীরা সদ্য উপহার পেল ‘গানপাগলের দল’কে। মূলত লোকায়ত গানকে নির্ভর করে ধামসা, মাদল, বাঁশি, দোতারার সুরকে সঙ্গে নিয়ে এদের দলগত পথ চলার সূচনা ঘটল সম্প্রতি। সূচনায় ধামসা, মাদল, খোল, তবলা, পাখোয়াজ ও ঢাকের সমষ্টিগত পরিবেশনাটি ছিল আশিস সরকার ও স্বর্ণাভ সরকারের যুগলবন্দি।

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৩
Share: Save:

‘গানপাগলের দল’

জলপাইগুড়িবাসীরা সদ্য উপহার পেল ‘গানপাগলের দল’কে। মূলত লোকায়ত গানকে নির্ভর করে ধামসা, মাদল, বাঁশি, দোতারার সুরকে সঙ্গে নিয়ে এদের দলগত পথ চলার সূচনা ঘটল সম্প্রতি। সূচনায় ধামসা, মাদল, খোল, তবলা, পাখোয়াজ ও ঢাকের সমষ্টিগত পরিবেশনাটি ছিল আশিস সরকার ও স্বর্ণাভ সরকারের যুগলবন্দি। মনীষিতা নন্দী ও দেবলীনা বিশ্বাসের দ্বৈত কণ্ঠে শোনা যায় ‘আমরা নতুন যৌবনেরই দূত’। এর পর উত্তরবাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘ও বৈদেশা বন্ধু রে’। ছোট্ট স্বর্ণাভর পরিবেশনায় লোকায়ত গানগুলি সকলের মন ছুঁয়ে যায়। ‘হৃদয় মাঝে কাবা’ ও ‘দিলদরিয়ার মাঝি রে ভাই’ মনীষিতার কণ্ঠে সাবলীল ভাবে ফুটে ওঠে। গান দু’টির মেলবন্ধন হয় সৈকত ঘোষের রাগসঙ্গীতের সঙ্গে। হংসধ্বনি রাগে ‘লাগি লগন’ ও ‘আমার ভেতর ও বাহিরে’র সম্মিলিত পরিবেশনায় সৈকত ছিল পরিপূর্ণ। দেবলীনার কণ্ঠে ‘তোমার ঘরে বাস করে’ মনে রাখার মতো। মনীষিতার গলায় যখন ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’, সৈকতের কণ্ঠে তখন ভৈরবীর সুর, স্বর্ণাভর ঢাকের বাদ্যি, কাঁসর ঘণ্টাধ্বনিতে ফিরে ফিরে আসছিল পুজোর গন্ধ। সমগ্র অনুষ্ঠানটির অন্যতম প্রাপ্তি ছিল যতন রায়ের বাঁশির সুর আর চৈতন্য রায়ের দোতারা বাদন। সঞ্জিত দে-র হারমোনিয়ামও উল্লেখযোগ্য।

গৌড় মালদা

মালদহ থেকে প্রকাশিত হল “গৌড় মালদা সংবাদের” শারদ সংকলন। সম্পাদক অভিজিৎ চৌধুরী। ‘হিন্দু বুদ্ধিজীবীদের আরবি, ফারসি চর্চা’, মল্লিকা সেনগুপ্তের কবিতা, ক্ষেত্রনাথ পণ্ডিত ও সমসাময়িক মালদহের খণ্ডচিত্র-সহ অন্যান্য প্রবন্ধের পাঠক ঋদ্ধ হন। মনোযোগ আকর্ষণ করে কাব্যনাট্য, কবিতা, উপন্যাস এবং ভ্রমণ কাহিনিটিও। ছোটগল্পগুলিতে প্রতিফলিত হয় জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, স্কুল পড়ুয়াদের সাহিত্যের আঙিনায় আনার উদ্যোগটিও প্রশংসনীয়।

সহিত্য আড্ডা

বিজয় দশমী উপলক্ষ্যে সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করেছিল রবিবারের সাহিত্য আড্ডা। ১৯ অক্টোবর ইসলামপুরের টাউন লাইব্রেরি হলে সেই অনুষ্ঠানে আয়োজন ছিল স্বরচিত কবিতা পাঠ, হাস্য কৌতুক ও গানের। গানে অংশ নিয়েছিলেন সঞ্চিতা ভৌমিক, অরুণাভ রায়, কবিতায় অংশ নিয়েছিলেন শর্মিষ্ঠা সুর। হাস্য কৌতুকে অংশ নেন কর্ণদেব রায়।

সেন্ট যোসেফ স্কুলের প্রদর্শনী

ভাঙাচোরা কাচের চুড়ি। তা জোড়া লাগিয়ে তৈরি হয়েছে ঘাড় উঁচু করা মোরগ। রং-বেরংয়ের সেই চুড়িতে আলো পড়লে মনে হয়, গর্বিত গ্রীবা, ঝলমলে পালক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মোরগটি। কোথাও আবার কাপড়ের টুকরো সূঁচ-সূতোয় বাহারি রুমাল হয়ে উঠেছে। কোনও ঘরে চলছে বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করে ‘ম্যাজিক’। নানা রাসায়নিক দিয়ে বিজ্ঞানের প্রদর্শনী। পরিবেশ সচেতনতার আয়োজনও কম ছিল না। খুদেরা পশুপাখি, মাছের উপযোগিতা, জীববৈচিত্র্য নিয়ে তথ্য তুলে ধরেছে। ছিল ঘর সাজানোর হরেক সরঞ্জাম। তুলির টানে মাটির প্রদীপ হয়ে উঠেছে দারুণ আকর্ষণীয়। ১৭ ও ১৮ অক্টোবর শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে মাটিগাড়ায় সেন্ট যোসেফস হাই স্কুলে বার্ষিক প্রদর্শনী হল। স্কুলের সব ক্লাসের প্রতিনিধিরাই অংশ নিয়েছে। পড়ুয়াদের আগ্রহ, আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। হাই স্কুলের তরফে সিস্টার জেসিন্তা ও প্রাথমিক স্কুলের পক্ষে সিস্টার শান্তি সহ সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রয়াসে খুশি অভিভাবকরাও।

বিজয়া দশমী

লেখা: সুদীপ দত্ত।

কালিম্পং দুর্গাপূজা কমিটির বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় শহরের টাউন হলে। অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের দুর্গাস্তোত্র পাঠ অনুষ্ঠানটিকে অন্য মাত্রা দেয়। সঞ্চিতা দাশগুপ্তের রবীন্দ্রসঙ্গীত শ্রোতাদের মন কেড়ে নেয়। স্থানীয় সূর্য সংঘের নৃত্যানুষ্ঠানের সঙ্গে ছিল মধুশ্রী দাশগুপ্তের একক নৃত্য। ছিল প্রশান্ত ছেত্রীর গানও। ছিলেন নেপালি-ভুটিয়া-লেপচা প্রভৃতি বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ।

‘আবৃত্তি বলয়’

মালদহ জেলার ‘আবৃত্তি বলয়’ একটি প্রতিষ্ঠিত নাট্যসংস্থা। সম্প্রতি তাদের নিবেদনে ছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লালমাটি উপন্যাসের নাট্যরূপান্তর। পটভূমিতে রয়েছে প্রাক স্বাধীনতা থেকে স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পরবর্তী কিছু দিনের উত্তাল সময়। উপন্যাসটির শ্রুতি নাট্যরূপ, নাট্য ও সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মধুমিতা কর্মকার। মুখ্য ভূমিকাতেও ছিলেন তিনি। ভৈরব নারায়ণের ভূমিকায় দেবাশীষ চট্টরাজ, রঞ্জন এর ভূমিকায় দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝুমরির ভূমিকায় সঞ্চিতা গুহনিয়োগীর অভিনয় যথাযথ। অভিনয় করেছেন পার্থ প্রধান, বিপ্লব সাহা, ও দিবাকর ভট্টাচার্য। ছিল গম্ভীরা গান ও সাপুরের গান।

তিস্তা-তোর্ষা

কাঁটাতারের বেড়া ভাগ করেছে দুই বাংলাকে। যদিও ভাষা-সাহিত্যের আকাশ-মাটি ভাগ করা যায়নি। দুই বাংলার মৈত্রী বন্ধনকে দৃঢ় করতে নানা সংগঠন, সংস্থা সবসময়েই উদ্যোগী প্রয়াস চালাচ্ছে। এই প্রয়াসের অন্যতম শরিক প্রবাহ তিস্তা-তোর্সা। দুই বাংলার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের উদ্দেশ্যে এই পত্রিকা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছে চলেছে বলে জানানো হয়েছে। প্রয়াত সাহিত্যিক অমিয়ভূষণ মজুমদারের নামে পুরস্কার চালু করা হয়েছে পত্রিকার তরফে। বাংলাদেশের লেখক আব্দুস শাকুর এবং এ পার বাংলার গবেষক রমাপ্রসাদ নাগকে অমিয়ভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়। উপমহাদেশের অন্যতম গল্পলেখক হাসান আজিজুল হক এবং নবারূণ ভট্টাচার্যকেও সম্মান দেওয়া হয়। প্রবাহ তিস্তা-তোর্সা সম্মান দেওয়া হয় দুই বাংলার লেখক, গবেষক, কবি এবং বিশিষ্টজনদের। বাংলা ভাষার জনপ্রিয় লেখকদের সকলেই এই পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন বলে সম্পাদকীয় দফতর জানিয়েছেন। কৃষ্ণ দেব সম্পাদিত পত্রিকাটিতে এবারের পুজো সংখ্যার প্রচ্ছদ এঁকেছেন উদয় ভৌমিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE