বাস নেই। মালদহে এ ভাবেই বুধবার যাতায়াত করতে হয়েছে বাসিন্দাদের।—নিজস্ব চিত্র।
বাসের চালকদের ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’ নবীকরণে নতুন নিয়ম প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার থেকে মালদহের সিটু ও ইউটিইসি-র শ্রমিক সংগঠনের চালকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলা জুড়ে বাস ধর্মঘট শুরু করেছে। চালকদের ডাকা বাস ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বাসচালকরাও। হঠাৎ ধর্মধটের জেরে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন যাত্রীরা।
ধর্মঘটের জেরে জেলায় ২০০টির বেশি বাস চলেনি। বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যসোসিয়েশন ধর্মঘটের প্রতিবাদ করলেও লাইসেন্সের ব্যাপারে চালকদের দাবিকে সমর্থন করেছেন তাঁরা। মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানান, বাস চালকদের লাইসেন্স নবীকরণ নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, ২-৩ দিনের মধ্যে তা মিটে যাবে। জেলাশাসক বলেন, “যে বাস চালকদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।”
লাইসেন্স নিয়ে কেন এই সমস্যা? সিটু অনুমোদিত মালদহ পরিবহণ ইউনিয়নের সম্পাদক কৃষ্ণ মন্ডল দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছে প্রশাসন। তাঁর যুক্তি, একজন চালক এইপিএমভি লাইসেন্স নিয়ে ২০-২৫ বছর ধরে বাস চালাচ্ছেন। সেই চালক লাইসেন্স নবীকরণ করাতে গেলে পরিবহণ অফিস থেকে বলা হয়েছে, যে কোনও মোটর ট্রেনিং স্কুল থেকে এইচপিএমভি-র (হেভি পারসন মোটর ভেহিক্যাল) ট্রেনিংয়ের সার্টিফিকেট ও সেই মোটর ট্রেনিং স্কুলের বাসের নম্বর দিয়ে আবেদন করতে হবে। না হলে চালকের লাইসেন্স নবীকরণ করা হবে না।” ওই কারণ দেখিয়ে অন্তত ৩০ জন বাস চালকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তা নবীকরণ না করে ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। ইউটিইউসি অনুমোদিত মালদহ মোটর এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক মহম্মদ কাইসুদ্দিন বলেন, “মালদহ জেলা একটিও মোটর ট্রেনিং স্কুল নেই। কী করে বাসের চালকরা ট্রেনিংয়ের সার্টিফিকেট জোগাড় করবেন? জেলা প্রশাসন যদি এই নিয়ম প্রত্যাহার না করে তবে বাস ধর্মঘট লাগাতার চলবে।” তবে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “এই নিয়ম তো বহু দিনই রয়েছে, এখন কেন তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা বুঝতে পারছি না।”
আচমকা বাস ধর্মঘটের ফলে এদিন সকাল থেকেই ছোট গাড়িতে উপচে পড়ে ভিড়। গাড়ির ছাদে ও পিছনে ঝুলে নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। রতুয়া এক পঞ্চায়েত কর্মী আবদুল লতিফ বলেন, “বিপদ মাথায় নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছি।” এদিন অফিস যেতে পারেননি মঙ্গলবাড়ির রতন সরকার। তিনি বলেন, “যখন একটা ছোট গাড়ি পেলাম। সেটা ভিড়ে ঠাসা। তা ছাড়া অফিসে ঢোকার সময়ও তখন পেরিয়ে গিয়েছে।” মালদহ বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিমাই বিশ্বাস বলেন, “এই ভাবে আগাম ঘোষণা না করে বাস ধর্মঘট ডেকে যাত্রীদের বিপাকে ফেলার কোনও মানে হয় না।” নিমাইবাবু অবশ্য বলেন, “তবে বাসের চালকরা যে কারণে ধর্মঘট ডেকেছেন তা যুক্তিযুক্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy