Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতালে ভাঙচুর রোগীর

গভীর রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে আচমকা এক রোগী ভাঙচুর শুরু করলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগী এবং নার্সরা। সোমবার রাত দুটো নাগাদ তিন তলায় হাসপাতালের মেল আইডি ওয়ার্ডের ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১০
Share: Save:

গভীর রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে আচমকা এক রোগী ভাঙচুর শুরু করলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগী এবং নার্সরা। সোমবার রাত দুটো নাগাদ তিন তলায় হাসপাতালের মেল আইডি ওয়ার্ডের ঘটনা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগী ১৯ বছরের এক তরুণ। তাঁকে রাতে ইঞ্জেকশন দিতে ডাকা হলে রেগে ওঠেন। অভিযোগ, ওয়ার্ডের এক নার্সকে হাত ধরে টেনে ধাক্কা দেন। ধাক্কা দেওয়া হয় এক আয়াকেও। ওষুধ রাখার ছোট ট্রলি তুলে ছুড়ে ফেলেন নার্সদের বসার কাউন্টারে। ওষুধপত্র চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। চেয়ার আছড়ে ফেলেন। ভয়ে অন্য রোগীরা ওয়ার্ড থেকে স্যালাইন নিয়ে তড়িঘড়ি বেরিয়ে পড়েন। হট্টগোল শুনে পাশের ওয়ার্ড থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ছুটে যান। চিৎকার চেঁচামেচি, দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।

রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক গিয়ে রোগীকে দেখেন। পরে আরেক চিকিৎসককে কল করে ডেকে আনা হয়। তিনি গিয়ে রোগীকে পরীক্ষা করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করেন। ঘন্টাখানেক পর বাড়ির লোকেরা রোগীকে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল ছুটিতে রয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত সুপার অমিত দত্ত বলেন, ‘‘কী হয়েছে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’’ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানান, বিষয়টি শুনেছেন। তবে ঘটনার সময় হাসপাতাল চত্বরে থাকা পুলিশ ক্যাম্পে খবর দিলে পুলিশ কর্মীরা গিয়ে যথাযথ সহায়তা করেননি বলে অভিযোগ। তাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশ অসন্তুষ্ট। তাঁরা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। মদন দাস, সবিন বর্মনদের মতো অন্য রোগীরা বলেন, ‘‘ওই রোগকে ভাঙচুর চালাতে দেখে আমরা কোনও ক্রমে বেরিয়ে যাই।’’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিন দিন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত ওই তরুণ বাড়িতেই ছিলেন। এ দিন রাত সওয়া বারোটা নাগাদ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, কযেকদিন ধরে ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণে না আসায় শরীরে ‘ডিহাইড্রেশন’-এর কারণে রোগীর আচরণে অসঙ্গতি হতে পারে। রোগী সাধারণত দুর্বল হবে। এই ভাবে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলবে না। চিকিৎসক দিলীপ রায় বলেন, ‘‘ডয়েরিয়ার জন্য শরীর থেকে জল, সোডিয়াম, পটাশিয়াম বেরিয়ে গেলে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। তবে রোগীর পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে নার্ভকে উত্তেজিত করে এমন ‘ড্রাগ’ নিতে পারে ওই তরুণ। তাঁর প্রভাবে এটা ঘটেছে। এই অবস্থায় ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হচ্ছিল। মানসিক রোগের চিকিৎসার প্রয়োজন। সে জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়।’’

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘রোগীর বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাঁর যে কোনও পরিস্থিতি হতেই পারে। সমস্যা হয় তার সঙ্গে বাড়ির লোকেরা মিলে গেলে। তাঁরা গোলমালে করলে।’’ হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশ জানান, ঘটনার সময় হাসপাতাল চত্বরে থাকা পরিবারের লোকেদের ডাকা হয়। তাঁরা গিয়ে উল্টে স্বাস্থ্যকর্মীদের দোষারোপ করেন ভুল ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে বলে। পরে চিকিৎসক তাঁদের বিষয়টি বোঝান।

সচেতনতার উদ্যোগ। শহরে পর পর কেপমারির ঘটনার জেরে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে প্রচারপত্র টাঙিয়ে গ্রাহকদের সচেতন করার সিদ্ধান্ত নিল জলপাইগুড়ি পুলিশ৷ পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক থেকে যাঁরা এক সঙ্গে বেশি অর্থ তুলবেন, ক্যাশ কাউন্টার থেকেই যাতে তাঁদের সতর্ক করে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলিকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তবে সোমবার শহরে একের পর এক কেপমারির ঘটনায় পুলিশ অবশ্য এখনও কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি৷ এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ব্যাঙ্কগুলির ক্যাশ কাউন্টারে টাঙানো প্রচারপত্রে লেখা থাকবে টাকা তুলে বেরনোর সময় গ্রাহকরা যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেন৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Patient Vandalism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE