Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগে ধৃত আট

নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সহ আটজনকে নির্বাচনী বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার করল ভক্তিনগর থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ক্ষুব্ধ বিরোধীরা, একে নজিরবিহীন ঘটনা বলে দাবি করেছেন। এই ঘটনায় ভোট সন্ত্রাসের ছায়া দেখছেন তাঁরা। নির্বাচনী বিধি ভাঙলে কাউকে গ্রেফতার করা যায় কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাঁর কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁদের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে ভক্তিনগর থানা ঘেরাও করেন নির্দল প্রার্থী মুনমুন চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৩
Share: Save:

নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সহ আটজনকে নির্বাচনী বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার করল ভক্তিনগর থানার পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ক্ষুব্ধ বিরোধীরা, একে নজিরবিহীন ঘটনা বলে দাবি করেছেন। এই ঘটনায় ভোট সন্ত্রাসের ছায়া দেখছেন তাঁরা। নির্বাচনী বিধি ভাঙলে কাউকে গ্রেফতার করা যায় কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাঁর কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁদের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে ভক্তিনগর থানা ঘেরাও করেন নির্দল প্রার্থী মুনমুন চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা। পরে অবশ্য ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে পেশ করা হলে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

অভিযুক্ত নির্দল প্রার্থী মুনমুন চৌধুরী অবশ্য পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ এনেছে বলে দাবি করেছেন। বরং তৃণমূলই বিধি ভেঙে প্রচার করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি। তবে তাঁদের অভিযোগে আমল দেয়নি পুলিশ বলে জানান নির্দল প্রার্থী। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, ‘‘আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৪১ সিআরপিসিতে মামলা করা হয়েছে।’’ কোনও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে বা তার আশঙ্কা থাকলে তা রুখতে পুলিশ যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে বলে তিনি জানান। তবে অন্য কোনও অভিযোগের কথা তাঁর জানা নেই বলেও জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকা থেকে কেউ ফোনে অভিযোগ জানান, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছিলেন মুনমুনদেবীর কর্মী-সমর্থকরা। তার ভিত্তিতেই ওই আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুনমুনদেবীর দাবি, ‘‘আমরা বুথ অফিসে বসে প্রতীক আঁকা পতাকা, চিহ্ন গোছাচ্ছিলাম। সেই সময় পুলিশ এসে আমাদের কর্মীদের জোর করে উঠিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের দুটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করে।’’ তাঁর দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে দাবি করে পুলিশ। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানতে পারেন। তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে থাকা লোকের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়াতে শাসক দল তৃণমূলই ভয় পেয়েই এমন করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই ঘটনা দিয়েই শহরে সন্ত্রাসের শুরু হল বলে মনে করছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এবারের পুরভোটে কাউন্সিলর পদ প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা আগেই পুলিশের কাছে সন্ত্রাস হতে পারে বলে জানিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। এটা তার নমুনা। নির্বাচনী বিধি কেউ ভেঙে থাকলে নির্বাচন কমিশন দেখবে, শোকজ করবে। তার পদ্ধতি রয়‌েছে। এ ভাবে গ্রেফতার করা যায় না।’’ এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাম জমানার অপশাসনের সময়েও এমন সন্ত্রাসের চেহারা দেখিনি। ভোটের দিন কী হবে চিন্তায় রয়েছি।’’ দার্জিলিং জেলা বিজেপির সভাপতি রথীনবাবু তৃণমূল নির্লজ্জ্বভাবে ভোটে জেতার জন্য মরিয়া হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।

যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ নিজের কাজ করছে। আমি দল নিয়ে ব্যস্ত, কোথায় কী হচ্ছে তা জানি না। বিরোধীরা কী বলল তা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE