Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মৃত প্রসূতি, বিক্ষোভ

সকাল থেকে দফায় দফায় তা নিয়ে ওয়ার্ডের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জুঁইয়ের পরিবারের লোকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মেডিক্যাল কলেজের ফাঁড়ি থেকে পুলিশ যায়। দুপুরে হাসপাতাল সুপারের অফিসে গেলেও সুপার ছিলেন না।

মেডিক্যালে পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

মেডিক্যালে পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন রোগিণীর আত্মীয়েরা। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা। মৃতের নাম জুঁই সরকার (৩০)। বাড়ি রাজগঞ্জের সাহাপাড়ায়। জুঁইয়ের মা শিখাদেবীর বক্তব্য, ‘‘মেয়ে অসুস্থ হয়ে ব্যথায় ছটফট করছিল। তখনও নার্স ও চিকিৎসক খারাপ ব্যবহার করে।’’

পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ প্রসূতিকে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন বিকেল ৪টে নাগাদ অস্ত্রোপচার করে প্রসবের জন্য নিয়ে গেলেও সেখানে ৬ ঘন্টা ফেলে রাখা হয়। সঙ্গে আরও পাঁচ জন প্রসূতিকে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের অস্ত্রোপচার হয়ে যায়। পরে আরও ৬ জন প্রসূতিকে নিয়ে গিয়েও অস্ত্রোপচার করানো হয়। শেষ পর্যন্ত রাত ১০টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করা হলে জুঁইদেবী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এর পর ওয়ার্ডে পাঠানো হলে রাতে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল তাঁর। অথচ ঠিক মতো চিকিৎসা না-হওয়ায় সকালে মারা যান বলেই তাঁর পরিবারের দাবি।

সকাল থেকে দফায় দফায় তা নিয়ে ওয়ার্ডের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জুঁইয়ের পরিবারের লোকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মেডিক্যাল কলেজের ফাঁড়ি থেকে পুলিশ যায়। দুপুরে হাসপাতাল সুপারের অফিসে গেলেও সুপার ছিলেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। খারাপ ব্যবহারের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।

মৃতার মা শিখাদেবী, মাসতুতো দিদি বাবলি মজুমদারদের অভিযোগ, রাতেই দায়িত্বে থাকা নার্সকে বারবার জানানো হয় রোগিণীর শরীর ভাল নয়। পেটে ব্যথা হচ্ছে। কখনও নার্স এসে স্যালাইন লাগিয়ে, ইঞ্জেকশন দিয়ে যান। কখনও বারবার বলার জন্য খারাপ ব্যবহার করেন। রাতে কোনও চিকিৎসক দেখেননি। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ এক জুনিয়র চিকিৎসক এসে রোগিণীকে পরীক্ষা করেন।

ব্যথায় কঁকিয়ে উঠছেন দেখে রোগিণীকে চড় মেরে ‘চুপ কর। ন্যাকামি করছ’ বলেও নার্স ঝাঁজিয়ে ওঠেন বলে দাবি। শিখাদেবী বলেন, ‘‘আমি বলতে গেলে আমাকে ধমক দিয়ে চিকিৎসক জানান, আপনি চুপ থাকুন। ও কি বোবা না কি? শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মেয়ে মারা যায়। চিকিৎসক, নার্সদের গাফিলতির জন্যই মেয়েকে হারালাম। দোষীদের শাস্তি চাই।’’ স্বামী নির্মলবাবু জানান, হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক রাজগঞ্জ বাজারে চেম্বার করেন। স্ত্রীকে সেখানে দেখাতাম। তাঁর পরামর্শে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু পরিষেবা এমন হলে হাসপাতালের উপর আর নির্ভর করব কী ভাবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE