Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দড়ি ঝুলিয়ে পথ আটকে চাঁদার জুলুম

রাস্তা দড়ির ব্যারিকেডে আটকে রাখায় যাতায়াতে অসুবিধে হচ্ছে বাসিন্দাদের। কিন্তু, মুখ ফুটে কিছু বলার উপায় নেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি ব্যারিকেডের দড়ি সরিয়ে চলে গেলেও চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় না। তাই বাসিন্দারা মুখ খুলতে পারেন না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কিশোর সাহা
মূর্তি (জলপাইগুড়ি) শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

শিলিগুড়ি থেকে মূর্তি, ভায়া বোদাগঞ্জ যেতে পাঁচ জায়গায় রাস্তা আটকে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মহালয়ার দিন থেকে চাঁদার উপদ্রব আরও বেড়ে গিয়েছে। বড়, ছোট চার চাকার গাড়ি তো বটেই, অটো, টোটো, বাইক, স্কুটি থামিয়েও জবরদস্তি চাঁদা আদায় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয়, রাস্তা দড়ির ব্যারিকেডে আটকে রাখায় যাতায়াতে অসুবিধে হচ্ছে বাসিন্দাদের। কিন্তু, মুখ ফুটে কিছু বলার উপায় নেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি ব্যারিকেডের দড়ি সরিয়ে চলে গেলেও চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় না। তাই বাসিন্দারা মুখ খুলতে পারেন না। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেছেন, ‘‘রাস্তা আটকে চাঁদা তোলা রুখতে অভিযান চলছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে স্পষ্ট অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভান্ডিরবাড়ি, বোদাগঞ্জ, মূর্তির রাস্তা আটকে চাঁদা তোলার ব্যাপারে অভিযোগ আসেনি। তবুও খতিয়ে দেখা হবে। এমন ঘটছে দেখলে পদক্ষেপ করা হবে।’’

পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাতে হয়তো কোথাও কাজ হচ্ছে। কিন্তু, কিছু জায়গায় যে বহাল তবিয়তে কয়েক কিলোমিটার পর ব্যারিকেড বানিয়ে চাঁদা চোলা হচ্ছে তা যে কোনদিন শিলিগুড়ি থেকে বোদাগঞ্জ হয়ে মূর্তির দিকে গেলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন, প্রথম ‘মানব-ব্যারিকেড’ গাড়ি-বাইক-অটো আটকাচ্ছে ভান্ডিরবাড়িতে। সেখানে প্রত্যেককে চাঁদা দিতে হবে। তবে চাঁর পরিমাণ নিয়ে তেমন জোরজুলুম নেই। কিন্তু কমপক্ষে ১০ টাকা দিতেই হবে।

সেখান থেকে বোদাগঞ্জের ভ্রামরী দেবী মন্দিরে ঢোকার দু কিলোমিটার আগে ফের ‘মানব-ব্যারিকেড’। বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে চাঁদা আদায়কারীরা। একটু আগেই চাঁদা দেওয়া হয়েছে জানালে ওঁরা তাচ্ছিল্যের হাসিতে বলে ওঠেন, ‘‘ওখানে পুজো হচ্ছে নাকি! ওঁরা কোথায় পুজো করছে খোঁজ নিন। এখানে সত্যিকারের পুজো।’’ রাস্তা আটকে এ ভাবে চাঁদা তোলা কি ঠিক হচ্ছে? প্রশ্ন করলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

বোদাগঞ্জ থেকে ক্যানাল রোড ধরে মূর্তির দিকে এগোলে দেখা যাবে ফের রাস্তা আটকে তোলা হচ্ছে চাঁদা। গাড়ি পিছু নিদেনপক্ষে ২০ টাকা। বাতাবাড়ি ঢোকার মুখে ভীষণ বিপজ্জনক ভাবে চাঁদা তোলা চলছে।

রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্যদিকে মোটা দড়ি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ অন্যমনস্ক হলেই দড়িতে বেঁধে হুমড়ি খেয়ে পড়বেন। বাইক, সাইকেলের তো দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। সেখানে দড়ির ব্যারিকেড উঁচু করে পথচারীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। চাঁদা না দেওয়া অবধি দড়ি উঠবে না! ওই এলাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারীদের অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশ সক্রিয় হলে এ ভাবে রাস্তা আটকে চাঁদা তোলার সাহস কারও হতো না। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি পুলিশ দেখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Donation Siliguri শিলিগুড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE