—নিজস্ব চিত্র।
শৈশবেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। বাবাও অন্ধ। মা পরিচারিকার কাজ করেন। তাতে একবেলা খাবার জোটে না। কিশোর ভাইকে তাই পড়াশোনা ছেড়ে ভিন রাজ্যে যেতে হয়েছে। ফলে বাড়ির চরম অভাবের পাশাপাশি তাকে প্রতিনিয়ত লড়তে হয়েছে নিজের সঙ্গেও। নিজের প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে। কিন্তু অদম্য জেদ আর মনের জোরে থাকলে যে সব বাধাকে জয় করা যায়, স্টার নম্বর পেয়ে তা দেখিয়ে দিয়েছে মালদহের রতুয়ার উদয়পুর হাই স্কুলের দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী জয় সিংহ। প্রাপ্ত নম্বর ৫২৩। কিন্তু ভাল ফল করলেও এরপর পড়াশোনা কী ভাবে চলবে তা নিয়ে বাবা-মায়ের পাশাপাশি দুশ্চিন্তায় পড়েছে জয়ও।
ফুলহার নদীর ওপারে চর এলাকার গ্রাম রাজকিশোরটোলায় তাদের বাড়ি। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্লুকোমায় আক্রান্ত হয়ে দু’চোখের দৃষ্টি হারায় সে। বাবা রামবিলাসবাবু দিনমজুরি করতেন। বছর দশেক আগে তিনিও অন্ধ হয়ে যান। তারপর থেকে মা শান্তিদেবী সংসারের হাল ধরতে পরিচারিকার কাজ শুরু করেন। ছোটভাই ভাস্কর ভিন রাজ্যে শ্রমিক। জয় মালদহে একটি ব্লাইন্ড স্কুলে পড়াশোনা করলেও অষ্টম শ্রেণির পর সেখানে আর পড়াশোনার সুযোগ নেই। উদয়পুর স্কুলের পাশেই বাড়ি জয়দের। স্কুলের পাশে প্রতিদিন তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আর পড়ায় আগ্রহের কথা জেনে এক সময় নবম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু সরকার। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘ও মেধাবী। শুনেই মনে রাখতে পারে। শিক্ষকরা ওকে সবরকম সাহায্য করতেন। ওকে দেখে অন্যরা প্রেরণা পাবে।’’ শিক্ষক হতে চায় জয়। সে জন্য নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড স্কুলে পড়তে চায় সে। কিন্তু কী ভাবে সম্ভব, তা এখনও অজানা। জয় জানায়, কী হবে কে জানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy