প্রশ্ন: উত্তরবঙ্গে পরিবেশের কোথাও কি ছন্দ কাটছে?
উত্তর: আমার সেই কবেকার ভাল লাগার জায়গা উত্তরবঙ্গ। যখন থেকে আবৃত্তিকে পেশা করেছি, তখন থেকেই যাতায়াত উত্তরবঙ্গে। পাহাড়, জঙ্গল, সংস্কৃতি—এত কিছুর মিশেল আমি আর কোথাও তেমন দেখিনি। কিন্তু আমাদের এই সম্পদকে আমরা কতটা তুলে ধরতে পেরেছি সবার সামনে? ধরুন কোথাও অনুষ্ঠান আছে, চার মাস আগে থেকে টিকিট কাটতে হবে ট্রেনে। বেশ। কিন্তু তাও রিজার্ভেশন পাব কি না সন্দেহ। আসলে ট্রেনের সংখ্যাই তো তেমন নয়। প্রথম সারির, বিলাসবহুল দ্রুতগামী ট্রেন এখনও নেই উত্তরবঙ্গে। এখনও অনেক জায়গাতেই সিঙ্গল লাইন।
তা হলে বিদেশি পর্যটকেরা কেন আসবেন!
অনুষ্ঠান করতে যখন বিদেশে যাই, দেখি কিছু দূর পর পরই রয়েছে শৌচালয়ের সুব্যবস্থা। পরিষ্কার। সুন্দর। পর্যটকদের খুবই সুবিধা। কিন্তু সে সব কি আদৌ রয়েছে উত্তরবঙ্গে?
পাহাড়-জঙ্গল-নদীর মনোরম উত্তরবঙ্গ। ফাইল চিত্র।
যোগাযোগ ব্যবস্থাটাকে আরও ঢেলে সাজাতে না পারলে এই সম্পদকে কী ভাবে তুলে ধরব সকলের সামনে? বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, দিনহাটা, মাথাভাঙা... কবিতার হাত ধরে সব জায়গাতেই পাড়ি দিয়েছি আমি। কী আশ্চর্য, রাত দশটার সময় যখন মঞ্চে উঠেছি দেখি তখনও সামনে ঠাসা ভিড়। হয়তো খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, কিন্তু ওই মানুষগুলোর জন্যই তখন কবিতার এক একটি শব্দ উচ্চারণ করে শিহরিত হয়েছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, এই সংস্কৃতিমনস্ক মানুষগুলোর কথা ভাবা উচিত আরও। উত্তরবঙ্গে প্রয়োজন আরও উন্নত প্রেক্ষাগৃহ। ভালো শব্দ, সুচারু মঞ্চ, দর্শকাসন—এ সমস্ত থাকলে সেখানে আরও উন্নত মানের অনুষ্ঠান করা সম্ভব। দেশি বিদেশি নানা অনুষ্ঠান করলে, সংস্কৃতির আদান প্রদান হবে। আমরাও ঋদ্ধ হব। ওঁরাও।
অনেকেই মাঝে মাঝে বলেন, আপনাদের কলকাতায় কত অন্য রকমের কাজ হয়। সেই সব নতুন ধরনের পরীক্ষামূলক কাজগুলি উত্তরবঙ্গেও নিয়ে যেতে চাই। দরকার সেই পরিকাঠামো। ওখানকার মানুষদেরও খিদেটা আছে। শুধু খাবারটা ভালো ভাবে পরিবেশন করার অপেক্ষা!
সাক্ষাৎকার: সাম্য কার্ফা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy