Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সিভিক ভলান্টিয়ার অভিযুক্ত

পর্যটক বোঝাই একটি গাড়িকে আটকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। তিনি লাঠি দিয়ে গাড়ির কাচও ভেঙে দেন বলেও ওই গাড়ির চালক ও পর্যটকদের অভিযোগ। ভক্তিনগর থানার শিলিগুড়ির আশিঘর মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০২:৩০
Share: Save:

পর্যটক বোঝাই একটি গাড়িকে আটকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। তিনি লাঠি দিয়ে গাড়ির কাচও ভেঙে দেন বলেও ওই গাড়ির চালক ও পর্যটকদের অভিযোগ। ভক্তিনগর থানার শিলিগুড়ির আশিঘর মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা এবং গাড়ি চালকদের অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই রাস্তায় বিভিন্ন গাড়ি থেকে টাকা আদায় করে। তাঁদের দাবি, ট্রাফিক বাতিকেও হঠাৎ সবুজ থেকে লালে বদলে দিয়ে কৌশলে গাড়ি চালককে বিপদে ফেলা হয়। পরে চাপ দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।

বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে শিলিগুড়ির ডিসি (ট্রাফিক) শ্যাম সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারের গাড়ি দাঁড় করানোর কথা নয়। কোনও লিখিত অভিযোগ না পেলেও ওসিকে ঘটনার একটি রিপোর্ট দিতে বলেছি। তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার কেন লাঠি হাতে ডিউটি করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় পুলিশ কর্তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে দার্জিলিং মেলে নিউ জলপাইগুড়িতে নামেন হাওড়ার আন্দুলের ১০ জনের একটি পর্যটক দল। তাঁরা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে গ্যাংটক যাচ্ছিলেন। ১০টা নাগাদ ইস্টার্ন বাইপাসে আশিঘর মোড় পার হওয়ার সময় ট্রাফিক সিগনাল সবুজ ছিল। সেই সময় গাড়ির চালক মহম্মদ সাকিব গাড়ি নিয়ে পার হতে যাওয়ার সময় হঠাৎ সিগনাল লাল হয়ে যায়। তাঁকে সেখানে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার জয়চন্দ্র রায় দাঁড়াতে বললে তিনি গাড়ি দাঁড় করাননি বলে অভিযোগ। সেই সময় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার দৌড়ে গিয়ে হাতের লাঠি দিয়ে মেরে গাড়ির সামনের কাঁচ ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। আশপাশের লোকজনও ছুটে আসেন। বচসা শুরু হয়। চালক গাড়ি নিয়ে সামনেই আশিঘর ফাঁড়িতে যান। পর্যটকদের তাড়াহুড়ো থাকায় কোনও লিখিত অভিযোগ না করেই তাঁরা রওনা হন। গাড়ির কাঁচ বদলে দেওয়া হবে বলে পুলিশের তরফে চালককে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পুলিশে অভিযোগ না হলেও বিতর্ক এড়াতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে ভক্তিনগর ট্রাফিক গার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের দাবি, ‘‘ওই চালক লাল বাতি থাকাকালীন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে দাঁড় করাতে বললেও তিনি দাঁড় করাননি।’’ তবে আইনি পথে না গিয়ে লাঠি চালালেন কেন? তা জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে চাননি। তবে গাড়ির চালক বলেন, ‘‘আমি সবুজ সিগনাল পেয়েই গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ লাল হয়ে যায়। আমাকে দাঁড়াতে বললে আমি এগিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়ানোর আগেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ার লাঠি দিয়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়।’’ ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন ওই পর্যটক দলটিও। দলের অন্যতম সদস্য সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। চালকের তেমন কোনও দোষ ছিল না। পরে অবশ্য থানার পুলিশ অফিসাররা বিষয়টি দ্রুত মিটিয়ে দেন। লাঠি দিয়ে এভাবে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার কাঁচ ভাঙবে ভাবাই যায় না।’’

পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল ও ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমাদের সংগঠনের এক জনকে এলাকায় পাঠানো হয়েছিল। পর্যটকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই দিকটা দেখা হয়েছে। যা হয়েছে তা কাম্য নয়, পুলিশ কর্তাদের বিষয়টি কড়া হাতে দেখা দরকার। এতে এলাকা নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। সম্রাটবাবু বলেন, ‘‘প্রতিটি পর্যটন মরসুমের আগে পুলিশ, প্রশাসন, গাড়ি চালক, পর্যটন ব্যবসায়ী সবাইকে নিয়ে একটা সমন্বয় বৈঠক করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা হলে অনেক অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়ানো যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourism bus Volenteer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE