মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এক গুচ্ছ দাবি জানালেন কোদালবস্তি সহ কালচিনি এলাকার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে ফেরার পথে জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের কোদাল বস্তি এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক রাভা মহিলাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন তিনি। আদিবাসী নাচের দলের মহিলাদের জড়িয়ে ধরেন তিনি। এলাকার বাসিন্দারাও মুখ্যমন্ত্রীকে নদী ভাঙন, বন্যপ্রাণের সমস্যা ও বোরো ভাষা নিয়ে নানা দাবির স্মারকলিপি তুলে দেন।
কোদালবস্তির বাসিন্দা কুন্তী রাভা নীলিমা রাভারা জানান, তোর্সা নদীর ভাঙনে বিপন্ন কৃষিজমি। এক দিকে হাতি ও গন্ডারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই। তার মধ্যে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী নামলেন তাঁদের এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রী শুনেছেন সমস্যা। সে কারণে এ বার আশায় বুক বেঁধেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। কালচিনি সাতালি এলাকার বোরো জাতির তরফে শম্পা নার্জিনারি, অম্বিকা সুব্বারা জানান এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে বিনা মূল্যে তাঁরা বোরো ভাষা শেখাচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষায় বোরো ভাষা অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের কোদালবস্তি রেঞ্জের কোদালবস্তি বিটের বাসিন্দা বীর রাভা জানান, বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের গ্রাম থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরের মালঙ্গি লজে ছিলেন। এ বার বুধবার তাঁদের বনবস্তি এলাকায় রাজ্যের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই তিনি বনবস্তির সমস্যাগুলি সমাধান করুক।’’ বাসিন্দারা জানান, গত দু’বছরে তোর্সা নদীর ভাঙনে কয়েক বিঘা জমি চলে গিয়েছে নদী গর্ভে। কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা। বনবস্তির প্রায় আড়াইশো পরিবার রাভা জনজাতি। বাকি একশো পরিবার আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত।
এলাকার বাসিন্দা অজিত কুজুর জানান, তাঁদের জমিতেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা হচ্ছে। এলাকায় বাসিন্দারা ধান লাগালে তা খেয়ে যায় হাতি ও বাইসন। মাঝে মধ্যে গন্ডার ঢুকে তছনছ করে এলাকার আবাদ। বিঘা প্রতি ধান লাগালে খরচ হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। সেখানে বন্যপ্রাণ আবাদের ক্ষতি করলে খরচ মেলে মাত্র সাতশো টাকা। তা ছাড়া হাসিমারার কাছে হলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত গ্রামের সাড়ে তিনশো বাসিন্দা।
এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কৃষ্ণ বসুমাতা জানান, ‘‘প্রচন্ড অসুবিধে হয় এলাকায়। মোবাইল টাওয়ার না থাকায় রাতবিরেতে অসুস্থ রোগীর জন্য গাড়ি জোগাড় থেকে শুরু করে বন্যপ্রাণ এলাকায় ঢুকলে বিপদে পড়েন বাসিন্দারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy