Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
প্রশাসনিক বৈঠকে কড়া মুখ্যমন্ত্রী

ভাষণ নয়, কাজ চাই

কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা জেলা আধিকারিক মাইকে জানালেন ৩৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ওটা ৪০ হাজার হবে। আমার কাছে কাগজ আছে।’’

একনজর: জলপাইগুড়িতে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সন্দীপ পাল

একনজর: জলপাইগুড়িতে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সন্দীপ পাল

অনির্বাণ রায় ও পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা জেলা আধিকারিক মাইকে জানালেন ৩৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ওটা ৪০ হাজার হবে। আমার কাছে কাগজ আছে।’’

মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির কলাকেন্দ্রে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর মেজাজ। মন্ত্রী থেকে আধিকারিক সকলের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ভাষণ দিলে হবে না, কাজ করুন।

গজলডোবার মেগা পর্যটন কেন্দ্র থেকে জলপাইগুড়ি জেলার কন্যাশ্রী প্রকল্পের কাজে ঢিলেমির অভিযোগ তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্প এবং দফতরের নাম ধরে ডেকে কোথায় দেরি হচ্ছে—বলে দিয়েছেন। কত বকেয়া রয়েছে তা-ও পরিসংখ্যান দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

গজলডোবায় মেগা পর্যটন প্রকল্পে হাতির করিডর সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট বন দফতর এখনও দেয়নি শুনে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের সচিবকে বলেন, ‘‘এ সব বন্ধ করুন। কাজ করুন। অন্যদের কাজ করতে দিন। গজলডোবায় ভোরের আলো স্বপ্নের প্রকল্প।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সকলকে বলছি, কাগজে ভাষণ দিলে শুধু হবে না, কাজ করতে হবে।’’

জলপাইগুড়ি জেলা সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পে লাল ফিতের বাঁধন রয়েছে বলে জানিয়ে মুখ্যসচিবকে এ বিষয়ে নজর দিতে অনুরোধ করেছেন তিনি। জেলায় নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের কাজকর্ম নিয়েই বৈঠকে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কন্যাশ্রী থেকে সুসংহত শিশু বিকাশ, আদিবাসী বৃত্তি প্রকল্পের হাল শুনে সব প্রধান সচিবদের চার মাস অন্তরে জেলায় গিয়ে বৈঠক করার নির্দেশও দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি বৈঠক করে চলে গেলেই আবার কাজ ঢিলে হয়ে যায়। এ ভাবে হবে না। প্রধান সচিবরাও চার মাস পর পর জেলায় গিয়ে বৈঠক করুন।’’

এ দিনের সভায় হঠাই ভাঙরের প্রসঙ্গও উঠে আসে। ধূপগুড়ি বাইপাসের জমি পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে পূর্ত দফতরের প্রধান সচিব ইন্দিবর পাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেন। ঠিক কী সমস্যার জন্য অধিগ্রহণ আটকে রয়েছে, তার খোঁজ নেন। তখনই ধূপগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক মিতালি রায় বলেন, ‘‘ভাঙরের ঘটনার পরে অধিগ্রহণের কাজ বন্ধ থাকবে বলে বলা হয়েছিল।’’ মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকেন আধিকারিকরা। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, জেলাশাসক সকলের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কারও উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী সন্তুষ্ট হননি। তিনি বলেন, ‘‘কিছু শুনতে চাই না। দ্রুত কাজ শুরু করুন। রাস্তা তৈরি না হলে বাসিন্দাদের ভুগতে হবে।’’ সেই সঙ্গে জোর করে জমি না নিয়ে আলোচনা করেই সকলকে রাজি করানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রীর। বলেন, ‘‘মন দিয়ে কাজ করুন। কাজেই আনন্দ পাওয়া যায়। মন ভাল থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee North Bengal Administrative Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE