বোঝাই: খুচরো জমেই চলেছে। কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
মাস কয়েক আগে নোটবন্দির সময় চরমে উঠেছিল খুচরোর আকাল। এখন ছবিটা পুরো উল্টো। বাজারে কয়েন এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে খুচরোয় দাম মেটানো নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। ব্যাঙ্ক কয়েন জমা না নেওয়ায় সেই দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।
আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমন্বয়কারী লিড ডিস্ট্রিক ম্যানেজার তুষারকান্তি রায় জানান, কয়েন নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কয়েন জমা নিতে। তিনি বলেন, ‘‘এক দিনে একজনের কাছ থেকে এক হাজার টাকার বেশি কয়েন জমা নেওয়া যাবে না।’’ কিন্তু তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কে একবার কয়েন জমা হয়ে গেলে গ্রাহকরা কেউ তা নিতে চান না। সেগুলো বস্তা বন্দি হয়ে ব্যাঙ্কে পড়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাঙ্ক আধিকারিক জানান, কেউ যদি এক হাজার টাকার কয়েন নিয়ে আসেন তা হলে বসে বসে কাউন্টারে থাকা ব্যাঙ্ক কর্মীকে তা গুনতে হচ্ছে। সেসময় অন্য গ্রাহকদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পাশাপাশি ব্যাঙ্কগুলোর ভল্টে জায়গার সমস্যা রয়েছে। সেখানে প্রচুর কয়েন রাখা যায় না বলেও জানান ওই ব্যাঙ্ক আধিকারিক। তিনি বলেন, নোট বাতিলের সময় সবাই চেয়ে চেয়ে ব্যাঙ্কের থেকে কয়েন নিয়েছিলেন। এখন জমা দিতে চাইছেন।
আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে জানান, অনেক ব্যবসায়ীর কাছে কয়েক হাজার টাকার কয়েন জমে গিয়েছে। রোজ লেনদেন করতে গেলে ক্রেতারা কয়েন দিচ্ছেন। কিন্তু নিতে চাইছেন না। ব্যাঙ্কও জমা নিতে গড়িমসি করছে। আলিপুরদুয়ারের খবরের কাগজের ড্রিস্টিবিউটার বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রতিদিন হকাররা কাগজ নিতে এসে প্রচুর কয়েন দিচ্ছেন। দিনে প্রায় বারোশো থেকে পনেরোশো টাকার কয়েন জমছে।’’ এক সপ্তাহ আগে কিছু কয়েন ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে কয়েন জমা দিতে গেলে সারা দিন কেটে যাচ্ছে।’’ সমস্যায় পড়েছেন রাজাভাতা খাওয়ার ছোট ব্যবসায়ীরাও। সেখানকার চা বিক্রেতা বোচন গুহ জানান, ‘‘পর্যটকরা জিনিস কিনে খুচরো দিচ্ছেন। ছোট জনপদ। কাছাকাছি কোনও ব্যাঙ্ক নেই।’’ খুচরো জমে ব্যবসার মূলধনে টান পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy