দূষিত: কুলিক নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে আবর্জনা। —ফাইল চিত্র।
কুলিক নদীতে দূষণ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরেই। দূষণের জেরে কুলিক নদী সংলগ্ন কুলিক পক্ষিনিবাসের বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। দূষণের জন্য পরিযায়ী পাখিদের খাবারের সঙ্কটও হয় বলে তাঁদের অভিযোগ। সেই সঙ্কট রুখতে ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে কুলিক নদী ও সংলগ্ন এলাকায় দূষণ ঠেকাতে দীর্ঘ দিন ধরে সচেতনতা অভিযান চালাচ্ছে বিভিন্ন পরিবেশ ও পশুপ্রেমী সংগঠন। তবুও পুরোপুরি সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রমীদেরই একাংশ।
নদীতে আবর্জনা ফেলার অভিযোগে ১৩ অক্টোবর দুই রিকশাভ্যান চালককে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স অ্যান্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (হিমটা) সদস্যরা। ওই ঘটনার পর নদীতে দূষণ রুখতে বন দফতর ও পুলিশের তরফে নজরদারি বাড়ানো হবে বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই নদীতে দূষণ লেগে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বন দফতর ও পুলিশের নজরদারির অভাবের জেরে নদী ও সংলগ্ন এলাকায় দূষণ বেড়ে চলেছে। উত্তর দিনাজপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্ত ও রায়গঞ্জ থানার আইসি মহাকাশ চৌধুরীর দাবি, কুলিক নদী ও সংলগ্ন এলাকায় দূষণ রুখতে বন দফতর ও পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অভিযান ও সচেতনতার মাধ্যমে দূষণ রোখার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই ভিনরাজ্যের মাছ সরবরাহকারী একাধিক ট্রাকের চালক শহরের বিভিন্ন বাজারে মাছ নামিয়ে ট্রাকগুলোকে কুলিক নদীতে নামিয়ে সাফাই করেন। পাশাপাশি, একাধিক খালি পিকআপ ভ্যান ও ছোটগাড়ি নদীতে নামিয়ে ধোওয়ানো হয়। ফলে দিনভর নদীতে ভেসে বেড়ায় থার্মোকলের টুকরো ও নানা আবর্জনা। এছাড়াও রাতের অন্ধকারে বাসিন্দাদের একাংশ আবর্জনা ছা়ড়াও গৃহপালিত পশুদের নদী ও নদী সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ফেলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
হিমটার সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য ও রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিম্যালসের(পিএফএ) সভাপতি ভীমনারায়ণ মিত্রের দাবি, নদী দূষণ রুখতে গত ছ’মাস ধরে শহরজুড়ে সচেতনতা অভিযান ও সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু বন দফতর ও পুলিশ সক্রিয় হয়ে টানা নজরদারি ও অভিযান না শুরু করলে বিভিন্ন সংগঠনের তরফে শুধু সচেতনতা অভিযান করে নদী ও সংলগ্ন এলাকায় দূষণ রোখা সম্ভব হবে না।
পিএফএর উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার দাবি, নদী ও সংলগ্ন এলাকায় দূষণ বাড়তে থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য ও বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হবে। নদীদূষণের জেরে মাছ, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জলজপোকার অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে। খাদ্যসঙ্কটের জেরে ভবিষ্যতে পক্ষিনিবাস থেকে পরিযায়ীদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy