ভিড়: শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগীরা। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের করিডরে দু’দিন ধরে জ্বর নিয়ে পড়েছিলেন সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দা অমিত দাস। চিকিৎসক জানিয়েছেন তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে। রবিবার রাতে স্যালাইন শেষ হওয়ার পর সোমবার দুপুর পর্যন্ত কেউ তা বদলে দিয়ে যায়নি। চিকিৎসকের পরামর্শে এ দিন তাই বাড়ি যাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘করিডরে দিনে রাতে মশার ঝাঁক ঘুরছে। বসে থাকাই দায়। তার উপর রোগীর ভিড়ে নার্স ,আয়ারা স্যালাইন কখন লাগিয়ে দিয়ে যাবে তার জন্য বসে থাকতে হচ্ছে। নোংরার মধ্যে বসে খাওয়া দাওয়া করাই দায়।’’
চিকিৎসক কী পরামর্শ দিলেন?
অমিতবাবু জানালেন, চিকিৎসক নিজেই সব দেখে বললেন, ‘‘দেখছেন তো। এখানে থাকলে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। বাড়ি যান। দুই এক দিন পরে এসে দেখিয়ে যাবেন।’’
মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন রোগীদের অনেকেই। করিডরের মেঝেতে শয্যার বাইরে রবিবার দুপুর থেকে পড়ে রয়েছেন জ্বরের রোগী রাম কারয়া। তাঁর হুঁশ নেই। পকেটে রাখা পরিচয় পত্র আধারকার্ড দেখে বোঝা যায় তিনি দার্জিলিং জেলার ভুলকা এলাকার বাসিন্দা। নার্স, চিকিৎসকরা করিডরে তাঁর পাশ দিয়েই হেঁটে চলে যাচ্ছেন। অথচ কারও ভ্রূক্ষেপ নেই রোগীটির দিকে। আশেপাশের কয়েকজন রোগীর পরিবারের লোক বহুবার বলার পর এক সাফাই কর্মী এ দিন দুপুরে রামবাবুকে মেঝে থেকে শয্যার উপরে তুলে দেন।
এক রোগীর আত্মীয় মিঠুন রায় বলেন, ‘‘কাল থেকে ওই রোগী এ ভাবেই পড়ে ছিলেন। কেউ তাঁকে দেখেননি। আমরাও চিন্তায় রয়েছি।’’ হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘কেন ও ভাবে রোগী পড়ে রয়েছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তবে জ্বরের রোগীর ভিড়ে হাসপাতালে শয্যার সমস্যার কথা তিনিও স্বীকার করেন। জায়গা না-থাকাতে রোগীদের অনেককেই করিডরে রাখতে হচ্ছে বলে জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে মেডিসিন বিভাগ এবং ফিভার ক্লিনিক মিলিয়ে দু’শোর মতো রোগী ভর্তি রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুয়ায়ী শিলিগুড়ি পুর এলাকাতেই ডেঙ্গি আক্রান্ত এক হাজারের বেশি। মাটিগাড়া, শিবমন্দির, খড়িবাড়ির মতো মহকুমা এলাকায় ডেঙ্গি, ভাইরাল জ্বর ছড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy