Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চৈত্রের দুপুরে ঘনাল আঁধার

ভরদুপুরেই যেন সন্ধ্যে নেমে এসেছে। সোমবার বেলা ১২টায় সোনাদা থেকে ঘুমের ছবিটা ছিল এমনই। ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কয়েক দফায় শিলাবৃষ্টিও। শিলের কুচি জমে গিয়ে কোথাও তা বরফের চাদরের মতো চেহারা নিয়েছে।

কুয়াশা। বেলা সাড়ে বারোটায় ঘুম স্টেশন। ছবি: কিশোর সাহা

কুয়াশা। বেলা সাড়ে বারোটায় ঘুম স্টেশন। ছবি: কিশোর সাহা

কিশোর সাহা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০২:০০
Share: Save:

ভরদুপুরেই যেন সন্ধ্যে নেমে এসেছে। সোমবার বেলা ১২টায় সোনাদা থেকে ঘুমের ছবিটা ছিল এমনই। ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কয়েক দফায় শিলাবৃষ্টিও। শিলের কুচি জমে গিয়ে কোথাও তা বরফের চাদরের মতো চেহারা নিয়েছে। চৈত্রের দুপুরে এমন হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা সত্ত্বেও দার্জিলিঙের রাস্তায় কিন্তু বেশ ভিড়। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য টয় ট্রেনের চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। কিন্তু, দেরিতে হলেও সব কটি ‘জয় রাইড’ চলেছে। তাতে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা বেশ তারিয়ে উপভোগ করেছেন।

মুর্শিদাবাদের রফিকুল রহমানের কথাই ধরা যাক। মধুচন্দ্রিমার জন্য রবিবার দার্জিলিঙে পৌঁছেছেন। চিত্রে থেকে সান্দকফু অবধি বরফে মোড়া শুনে গাড়ি নিয়ে সাত সকালেই মানেভঞ্জনে গিয়েছিলেন। কিন্তু, ল্যান্ডরোভার মেলেনি বলে হতাশ হয়ে ফিরেছেন ঘুম স্টেশনে। সেখানে দাঁড়িয়ে দুপুরে সন্ধের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। তিনি বললেন, ‘‘বরফ পড়ার দৃশ্য দেখতে পেলাম না বলে আক্ষেপ রয়ে গেল। কিন্তু, গরমের দেশ থেকে এসে আবহাওয়াটা চুটিয়ে উপভোগ করছি আমরা।’’

কেন এমন আবহাওয়া?

আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা দুর্যোগ টেনে এনেছে উত্তরবঙ্গে। সমতল এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি- শিলাবৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া এবং পাহাড়ে তুষারপাত চলছে। গত সপ্তাহের শেষে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর দাবি করেছিল নিম্নচাপটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে। যদিও সপ্তাহের শুরুতে সেই নিম্নচাপের দাপটেই তুষারপাত-বৃষ্টি চলছে। সোমবার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি অবস্থান পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুর্যোগ চলতে পারে।

এ দিন দুপুরেও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর থেকে সিকিম প্রশাসনকে সর্তক করা হয়। বিকেল পর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে থাকার কথা বলা হয়। আবহাওয়া দফতর জানায়, উত্তর এবং পূর্ব সিকিমে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। শিলাবৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সিকিম জুড়েই বৃষ্টি চলছে। তবে উত্তর এবং পূর্ব সিকিমের দুই জেলায় দুর্যোগের মাত্রা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ দিন সন্ধের পরে গ্যাংটক, তাদং, মঙ্গনে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। লাচুঙে এক পশলা শিলা বৃষ্টিও হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘সিকিম সহ হিমালয় পাদদেশ এলাকা থেকে তেলঙ্গনা পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে নাগাড়ে জলীয় বাস্প টেনে আনছে নিম্নচাপটি। সে কারণেই দুর্যোগ শুরু হয়েছে।’’

বৃষ্টি এবং কনকনে হাওয়ায় সমতলের তাপমাত্রাও কমছে। এ দিন শিলিগুড়ির তাপমাত্রা একলাফে ৪ ডিগ্রি কমেছে। দিনের বেলায় শিলিগুড়ির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি। তবে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল আরও কম। তুষারপাত, কনকনে ঠাণ্ডার সুবাদে পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকায় খুশির হাওয়া দার্জিলিঙে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dense Fog
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE