আর সবার মতো ওঁদেরও ইচ্ছে হয় পরিবারের সবাইকে নিয়ে পুজোর আনন্দে মেতে উঠতে। ইচ্ছে করে রাতভর ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখতে। কিন্তু তাঁদের সেই অনুভবে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় সীমান্তের কাঁটাতার। পুজোর চারটে দিন পাশের গ্রামগুলি যখন সন্ধ্যা হতেই আলোয় ঝলমল করে ওঠে, তখন ওঁদের গ্রামে আঁধার। ওরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের রাজবংশী পাড়ার বাসিন্দা।
অথচ গত কয়েক দশক ধরে ওই গ্রামেও দুর্গাপুজো হত। ভারত-বাংলাদেশ সীমানার গ্রাম হলেও সে সময় কাঁটাতারের বেড়া ছিল না। জাঁকজমক করেই নিজেদের গ্রামে পুজো করতেন। দেশের সুরক্ষায় ১৯৯৯ সালে সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হলে গোটা রাজবংশী পাড়াটাই ও পারে পড়ে যায়। তবুও গ্রামের ৬০-৭০টি পরিবার দুর্গাপুজো করতেন। কিন্তু একে একে বেশিরভাগ পরিবার মূল ভূখন্ডে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন। ফলে এখন থেকে যাওয়া ১৪-১৫টি পরিবারের পক্ষে আর পুজো করা সম্ভব হয় না।
গ্রামবাসীরা বলেন, সকাল আটটা, দুপুর ১২টা ও বিকেল চারটে, এই তিন সময়ে এক ঘণ্টা করে গেট খোলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। মূল ভূ-খণ্ডে কোনও কাজে গেলে ফিরতে হয় সে সময়েই। এত হ্যাপা করে বড়রা আর পুজোয় যান না। তবে ছোটরা বাঁধন মানে না। দিনের বেলায় পাশের গ্রামে পুজো দেখে বিকেল পাঁচটার মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসে।
গ্রামের বাসিন্দা স্বপন রবিদাস, বিভূতি সিংহরা বলেন, ‘‘ঠাকুর দেখার আমেজই আসে সন্ধ্যার পর, কিন্তু সে সময় তো আমাদের থাকতে হয় কাঁটাতারের এ পারে। তাই পুজো আমাদের কাছে ফিকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy