Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সিসিইউ থেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক

এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত কিশোরকে ভূতে ধরেছে বলে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে ওঝা দিয়ে ঝাঁড়ফুক করাল পরিবার। বুধবার আলিপুরদুয়ার দুই ব্লকের বড়চৌকি গ্রামে তেল, সিদুঁর, কাঁচা কলা, পেয়ারা-সহ নানা সামগ্রী জড়ো করে পুজোর আয়োজন করা হয়।

সবার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যেই চলছে ঝাড়ফুঁক। — নারায়ণ দে

সবার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যেই চলছে ঝাড়ফুঁক। — নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত কিশোরকে ভূতে ধরেছে বলে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে ওঝা দিয়ে ঝাঁড়ফুক করাল পরিবার। বুধবার আলিপুরদুয়ার দুই ব্লকের বড়চৌকি গ্রামে তেল, সিদুঁর, কাঁচা কলা, পেয়ারা-সহ নানা সামগ্রী জড়ো করে পুজোর আয়োজন করা হয়। অসুস্থ কিশোরের ‘দোষ’ ঝাড়তে ঝাঁড়ফুক চলে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই। তবে প্রশাসনের উদ্যোগে ফের ওই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা শিবু হেমব্রম ও পুতুল হেমব্রম গত ১৪ এপ্রিল তাঁদের ছেলে বাপিকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, ‘‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোমে (এইএস) আক্রান্ত বছর চোদ্দোর ওই কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় চিকিৎসকেরা সিসিইউতে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন। ছেলেটির এইএস হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাতে তার বাবা, মা জোর করে ছেলেটিকে নিয়ে যান।’’ রাতে দেখা যায়, ওঝার ‘নিদান’ মেনে বাজারের ব্যাগে ঘাস কাটার কাস্তে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁরা। ওই দম্পতি চিকিৎসকদের কাছে দাবি করেন, ছেলেকে ভুতে ধরেছে। তাই হাসপাতাল থেকে নিয়ে তাঁরা ওঝার কাছে নিয়ে যাবেন। রাস্তায় যদি ভূত ধরে সেজন্য ওই লোহার টুকরো এনেছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পরিবারকে বুঝিয়েও সফল হননি বলে জানিয়েছেন চিন্ময়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘বারবার বোঝালেও ওঁরা না শোনায় আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনি।”

বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বড়চৌকি এলাকায় শিবু হেমব্রমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় আশপাশের বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন উঠোনে। স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত ছিলেন আলিপুরদুয়ারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিমান দাসও। প্রশাসনিক কর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সামনেই বাড়ির উঠোনে শুরু হয় পুজো। নাটাবাড়ির বাসিন্দা চন্দনা দাস নামে এক মহিলা পুজো করে অসুস্থ ছেলেটিকে ঝাড়ফুঁক করেন। চন্দনাদেবী জানিয়ে দেন, ‘‘ওর জ্বর ও জন্ডিস হয়েছে। সঙ্গে দোষ রয়েছে। চিকিৎসক জ্বর কমাক। পরে আমি ওর দোষ ঝেড়ে দেব।’’ চন্দনা দাসের স্বামী মনোরঞ্জন দাসও বলে দেন, ‘‘দোষ রয়েছে ছেলেটির।’’

ওঝাদের কথায় সায় দেন ওই কিশোরের বাবা শিবু হেমব্রমও। ঝাড়ফুঁকের পরেই ছেলেকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দিতে রাজি হন তিনি। শিবুবাবু বলেন, ‘‘ওঝা জানিয়েছেন ছেলের দোষ রয়েছে। সেজন্য ঝাঁড়ফুকের আয়োজন।’’ তার পরেই প্রশাসনের কর্মীরা অসুস্থ বাপিকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিমানবাবু বলেন, “আমরা কিশোরটিকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্যই সকালে ওঁদের বাড়ি গিয়েছিলাম। তবে বাড়ির লোক কিছু নিয়ম মানার পরই ছেলেকে হাসপাতালে পাঠাতে রাজি হন।”

ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এলাকায় সচেতনতা প্রসার নিয়ে। স্থানীয় ভাটিবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ দত্ত চৌধুরি জানান, ‘‘গ্রাম অঞ্চলের কিছু এলাকায় সচেতনতার অভাব রয়েছে। এলাকায় প্রশাসনের তরফে সচেতনতামূলক প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’’ আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করনম বলেন, “ছেলেটিকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমার ওই এলাকায় সচেতনতা মূলক প্রচার চালাব।’’

এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত কিশোরকে ভূতে ধরেছে বলে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে ওঝা দিয়ে ঝাঁড়ফুক করাল পরিবার। বুধবার আলিপুরদুয়ার দুই ব্লকের বড়চৌকি গ্রামে তেল, সিদুঁর, কাঁচা কলা, পেয়ারা-সহ নানা সামগ্রী জড়ো করে পুজোর আয়োজন করা হয়। অসুস্থ কিশোরের ‘দোষ’ ঝাড়তে ঝাঁড়ফুক চলে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই। তবে প্রশাসনের উদ্যোগে ফের ওই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা শিবু হেমব্রম ও পুতুল হেমব্রম গত ১৪ এপ্রিল তাঁদের ছেলে বাপিকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, ‘‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোমে (এইএস) আক্রান্ত বছর চোদ্দোর ওই কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় চিকিৎসকেরা সিসিইউতে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন। ছেলেটির এইএস হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাতে তার বাবা, মা জোর করে ছেলেটিকে নিয়ে যান।’’ রাতে দেখা যায়, ওঝার ‘নিদান’ মেনে বাজারের ব্যাগে ঘাস কাটার কাস্তে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁরা। ওই দম্পতি চিকিৎসকদের কাছে দাবি করেন, ছেলেকে ভুতে ধরেছে। তাই হাসপাতাল থেকে নিয়ে তাঁরা ওঝার কাছে নিয়ে যাবেন। রাস্তায় যদি ভূত ধরে সেজন্য ওই লোহার টুকরো এনেছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পরিবারকে বুঝিয়েও সফল হননি বলে জানিয়েছেন চিন্ময়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘বারবার বোঝালেও ওঁরা না শোনায় আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনি।”

বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বড়চৌকি এলাকায় শিবু হেমব্রমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় আশপাশের বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন উঠোনে। স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত ছিলেন আলিপুরদুয়ারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিমান দাসও। প্রশাসনিক কর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সামনেই বাড়ির উঠোনে শুরু হয় পুজো। নাটাবাড়ির বাসিন্দা চন্দনা দাস নামে এক মহিলা পুজো করে অসুস্থ ছেলেটিকে ঝাড়ফুঁক করেন। চন্দনাদেবী জানিয়ে দেন, ‘‘ওর জ্বর ও জন্ডিস হয়েছে। সঙ্গে দোষ রয়েছে। চিকিৎসক জ্বর কমাক। পরে আমি ওর দোষ ঝেড়ে দেব।’’ চন্দনা দাসের স্বামী মনোরঞ্জন দাসও বলে দেন, ‘‘দোষ রয়েছে ছেলেটির।’’

ওঝাদের কথায় সায় দেন ওই কিশোরের বাবা শিবু হেমব্রমও। ঝাড়ফুঁকের পরেই ছেলেকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দিতে রাজি হন তিনি। শিবুবাবু বলেন, ‘‘ওঝা জানিয়েছেন ছেলের দোষ রয়েছে। সেজন্য ঝাঁড়ফুকের আয়োজন।’’ তার পরেই প্রশাসনের কর্মীরা অসুস্থ বাপিকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিমানবাবু বলেন, “আমরা কিশোরটিকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্যই সকালে ওঁদের বাড়ি গিয়েছিলাম। তবে বাড়ির লোক কিছু নিয়ম মানার পরই ছেলেকে হাসপাতালে পাঠাতে রাজি হন।”

ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এলাকায় সচেতনতা প্রসার নিয়ে। স্থানীয় ভাটিবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ দত্ত চৌধুরি জানান, ‘‘গ্রাম অঞ্চলের কিছু এলাকায় সচেতনতার অভাব রয়েছে। এলাকায় প্রশাসনের তরফে সচেতনতামূলক প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’’ আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করনম বলেন, “ছেলেটিকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমার ওই এলাকায় সচেতনতা মূলক প্রচার চালাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Exorcism Patient
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE