স্বামীর আপত্তি সত্ত্বেও স্ত্রী বন্ধ্যাকরণ করাতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে দুই সন্তানকে স্বামীর কাছে রেখে বন্ধ্যাকরণ করাতে স্ত্রী বিহারের বারসই জেলা হাসপাতালে যান। সেটা মেনে নিতে না পেরে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার টুঙ্গইল বিলপাড়া এলাকায়। বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দুই শিশুর নাম প্রদীপ রায় ও পঞ্চমী রায়। প্রদীপের বয়স সাড়ে চার ও পঞ্চমীর দেড় বছর বয়স। তাদের বাবা ৪৫ বছর বয়সী অন্নদা রায়কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি বিচিত্রবিকাশ রায়ের দাবি, আপাতত দু’টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে শিশু দু’টির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কোনও অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অন্নদা পেশায় দিনমজুর। তাঁর স্ত্রী সঞ্জনা গৃহবধূ। তিন মাস ধরে বন্ধ্যাকরণের কথা বলছিলেন সঞ্জনা। কিন্তু অন্নদা রাজি ছিলেন না। এ দিন সকালে স্বামীর আপত্তি সত্ত্বেও দীপক ও পঞ্চমীকে স্বামীর কাছে রেখে বন্ধ্যাকরণ করাতে কালিয়াগঞ্জ থেকে ট্রেনে চেপে বারসইতে যান সঞ্জনা। অভিযোগ, সেই সময় বাড়িতে থাকা জিলেপির সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে সেগুলি ছেলে প্রদীপ এ মেয়ে পঞ্চমীকে খাইয়ে দেন অন্নদা।
এরপর তিনি নিজেও কীটনাশক মেশানো জিলপি খেয়ে নেন। কিছু ক্ষণ পর দুটি শিশু পেট ব্যথায় কাঁদতে শুরু করেন। অন্নদাও ব্যথায় চিত্কার শুরু করেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাঁদের কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশু দু’টিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা।
অন্নদা দাবি করেন, ‘‘আমি আরও সন্তান চেয়েছিলাম। কিন্তু স্ত্রী আমার সেই ইচ্ছে ও আপত্তি অগ্রাহ্য করে বন্ধ্যাকরণ করাতে বারসই গিয়েছিল। সেই রাগেই দুই ছেলেমেয়েকে বিষ খাইয়ে খুন করে আমিও বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।’’
সঞ্জনার বক্তব্য, ‘‘অভাবের সংসারে আর সন্তান চাইনি। স্বামী এ ভাবে দুই ছেলেমেয়েকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে বুঝতে পারলে বন্ধ্যাকরণ করাতে যেতাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy