খামতি রয়েছে, তা মেটাতে ব্যবস্থা নেই। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নি-সুরক্ষার ছবিটা এমনই।
গ্রন্থাগার-সহ বিভিন্ন ল্যাবরেটরিগুলিতে আধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। নেই ফায়ার অ্যালার্ম। অনেক ক্ষেত্রে ল্যাবে ঢোকা এবং বার হওয়ার একটি মাত্র পথ। রসায়ন বিভাগের ল্যাবরেটরিতে এক সঙ্গে অনেক ‘বার্নার’ জ্বালিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়। অথচ অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেই। লক্ষাধিক বই রয়েছে লাইব্রেরিতে। আগুন রোখার ব্যবস্থা নেই সেখানেও প্রেসিডেন্সি বিশ্বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে অগ্নিকাণ্ডের খবরে তাই এখানকার ছাত্র শিক্ষক মহলও উদ্বিগ্ন। তাঁরা চান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে যথাযথ অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা দ্রুত গড়ে তোলা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অনির্বাণ মিশ্র সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর নিয়ম মেনেই অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। বছরখানেক আগে থেকেই আলোচনা চলছে। একটি সংস্থাকে দিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ করানো হচ্ছে। প্রকল্প তৈরি করে আর্থিক বরাদ্দের জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।’’ কিন্তু কবে সেই সমীক্ষা হবে আর কবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
দমকলের তরফে ২০১২ সাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস আগেও দমকলের আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনায় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যথাযথ গড়ে তুলতে বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। দমকলের তরফে লিখিত আকারে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এখনও সেগুলি বাস্তবে কার্যকর করা হয়নি। দমকলের উত্তরবঙ্গ ডিভিশনের আধিকারিক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দ্রুত সেগুলি করা দরকার। তা না হলে কিছু ঘটে গেলে তখন একে অপরকে কেবল দোষারোপের পালা চলতে থাকে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যাম্পাসে শালবাগান এলাকার কাছে পানীয় জল সরবরাহের জলাধার রয়েছে। তার কাছাকাছি ভূগর্ভস্থ জলাধার তৈরির জন্য প্রস্তাব দিয়েছে দমকল কর্তৃপক্ষ। অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা গড়তে সেখান থেকে বিভিন্ন বিভাগগুলিতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। যাতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করতে সমস্যা না হয়। গ্রন্থাগার ও গবেষণাগারগুলির ক্ষেত্রে ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ লাগানো, বিকল্প সিঁড়ি বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বার হওয়ার একাধিক রাস্তা রাখতে বলা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলগুলি, প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন বিভাগগুলির কোথায় কী ভাবে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত পরিকল্পনার কথাও দমকলের তরফে জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। কর্মচারী সংগঠনগুলিও একই গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছে। সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সভাপতি গুরুচরণ রায় বলেন, ‘‘আমরাও চাই দ্রুত অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারি সমিতির সম্পাদক ফজলুর রহমান জানান, গ্রন্থাগার, মিউজিয়াম, ল্যাবরেটরি-সহ সমস্ত ক্ষেত্রেই উন্নত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy