আগামীকাল, সোমবার থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে সহায়ক দামে চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনবে জেলা খাদ্য দফতর। বালুরঘাট এবং তপন ব্লকের কিসানমান্ডি থেকে ধান কেনা শুরু হবে বলে জানান জেলাশাসক সঞ্জয় বসু। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিকে অল্প পরিমাণে ধান কেনা শুরু হবে। পরে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো হবে।’’
টাকার অভাবে জেলায় সরকারি স্তরে ধান কিনতে না-নামায় ধানের বাজার দর এক শ্রেণির ফড়ের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তাদের ঠিক করে দেওয়া কম দামে চাষিরা হাটে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছিল। শনিবার আনন্দবাজারের উত্তরের পাতায় এই নিয়ে খবর প্রকাশ হওয়ার পরে প্রশাসন নড়ে বসে।
জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় বলেন, ‘‘প্রথম দফায় চাষিদের কাছ থেকে জনপিছু ৩ কুইন্টাল করে ধান কেনা হবে। প্রতি কুইন্টাল ধানের দাম ১,৪৭০ টাকা। তার সঙ্গে প্রত্যেক চাষিকে আরও ২০ টাকা করে ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। তবে ধানের দাম মেটানো হবে চেকে।’’ সমবায় সমিতিগুলিতে টাকার অভাব মিটলে জেলাজুড়ে শিবির করে ধান কেনা শুরু হয়ে যাবে বলে তিনি
দাবি করেন।
একেই গত প্রায় একমাস থেকে নগদ টাকার অভাব। তার উপর নগদের বদলে চেকে দাম মেটানোর সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ধান চাষিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি প্রকৃত চাষিরা ধানের ওই সরকারি সহায়ক দামের ন্যায্য মূল্য পাবেন কিনা, তা নিয়েও কৃষকসভা সন্দেহ প্রকাশ করছে। বামেদের সংযুক্ত কিসানসভার জেলা নেতা বিমল তরফদারের অভিযোগ, দূরবর্তী কিসানমান্ডিতে মাত্র ৩ কুইন্টাল ধান বেচতে যেতে ছোট চাষিরা উৎসাহ পাবেন না। তার উপরে ওই ধান বেচে ৪,৪১০ টাকা চেকে পেয়ে তা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দিয়ে ২০০০ টাকার বেশি পাবেন না।
ফলে ফড়ে বা মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীদের কবল থেকে অধিকাংশ ছোট চাষির বের হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিমলবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘একটি এলাকার ছোট চাষির কাছ থেকে সহায়ক মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে নগদ টাকায় দাম মেটানোর টোপ দিলে কিসানমান্ডিত পৌঁছনো ও চেকের হ্যাপা চাষিরা এড়াতে চাইবেন। এর পর মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীরা ছোট চাষিদের কাছ থেকে ৩ কুইন্টাল করে ধান কিনে একবারে গাড়িতে চাপিয়ে কিসানমান্ডিতে গিয়ে বেচে চেক সংগ্রহ করে নেবেন। তাতে প্রকৃত চাষি সেই তিমিরে
থেকে যাবে।’’
জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্রবাবু এ বিষয়ে বলেন, ‘‘প্রকৃত চাষি দেখেই ধান কেনা হবে। তা ছাড়া ফড়েদের কাছে হাটে বিক্রির চেয়ে কিসানমান্ডিতে গিয়ে প্রতি কুইন্টাল ধানের দাম ৫০০ টাকা বেশি পাওয়ার সুযোগ চাষিরা ছাড়বেন না। প্রয়োজনে সকলে এক সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করে ধানের বস্তা নিয়ে কিসানমান্ডিতে হাজির হবেন।’’ তা ছাড়াও ব্যাঙ্কে চেক জমা দিয়ে চাষিরা একবারে যাতে টাকা পান, সে বিষয়টিও দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy